ফাইল চিত্র।
বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলন এবং সেখানেই তাঁদের কারও কারও বিষপান ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছিল। শিশু শিক্ষা কেন্দ্র বা এসএসকে-র শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি আটকাতে এবং তাঁদের স্থায়ীকরণের দাবি আদায়ে এ বার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের দ্বারস্থ হল শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ। রাজ্যপালকে স্মারকলিপি দেওয়ার পরে ওই মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মইদুল ইসলাম বুধবার বলেন, “রাজ্যপাল আমাদের সমস্যার কথা শুনেছেন। তাঁর দিক থেকে যতটা করা সম্ভব, তিনি তা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন আমাদের।”
রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যাঁরা এ দিন মইদুলের সঙ্গে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন বিকাশ ভবনের সামনে কীটনাশক খাওয়া দুই শিক্ষিকাও। তাঁদের এক জন বলেন, “অনেকে বলছেন, বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে দাবি আদায়ের আন্দোলন চালানোটা ঠিক পথ নয়। তা হলে তাঁরাই বলে দিন, বিকল্প পথটা কী? দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য আমরা বেশ কয়েক বার চিঠি দিয়েছি। উত্তর পাইনি। আমরা দেখা করে স্থায়ীকরণের বিষয়ে কথা বলতাম। তা তো পারলামই না, উল্টে এ নিয়ে আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের দূরে বদলি করে দেওয়া হল। বদলির নির্দেশে প্রবল দুশ্চিন্তার মধ্যে আমরা বিষ খেতে বাধ্য হয়েছিলাম।”
এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “আমি তো ওঁদের সঙ্গে দেখা করতেই চাইছি। কিন্তু সব কিছুর একটা রীতি-প্রকরণ রয়েছে। ওঁরা যে দেখা করতে চেয়ে আমাকে চিঠি দিয়েছেন, তার কোনও প্রমাণ (রিসিপ্ট কপি) আছে? ওঁরাই বরং কোনও আলাপ-আলোচনা চাইছেন না। কোনও উদ্যোগ দেখাচ্ছেন না।” শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, “রীতি-প্রকরণ না-মেনে নবান্ন-সহ বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন করতে করে ব্ল্যাকমেলিংয়ের রাস্তায় গেলে সরকার সরকারের মতো চলবে।”
আত্মহত্যার চেষ্টায় বিষপান করা এক শিক্ষিকা জানান, তাঁকে মুর্শিদাবাদের স্কুল থেকে জলপাইগুড়ি মাল ব্লকের চা-বাগানের মধ্যে একটি হিন্দি মাধ্যমের স্কুলে বদলি করা হয়েছে। তাঁর দাবি, মাত্র ১০ হাজার টাকা বেতনে কী ভাবে পরিবার ছেড়ে অত দূরে গিয়ে থাকা সম্ভব? “শিক্ষা দফতরের আধিকারিক এবং শিক্ষামন্ত্রীর প্ররোচনায় আমরা আত্মহত্যার পথে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম। এই মর্মে আমরা বিধাননগর কমিশনার ও বিধাননগর উত্তর থানায় ই-মেলও করেছি।”
কীটনাশক পান করা তিন শিক্ষিকা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মইদুল বলেন, “যে-দু’জন শিক্ষিকা এ দিন আমাদের সঙ্গে রাজভবনে গিয়েছিলেন, তাঁরাও এখনও পুরো সুস্থ নন। বাকি তিন শিক্ষিকার মধ্যে দু’জন এনআরএস এবং এক জন আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।”