—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আইনি লড়াই চলেছে দু’দশকেরও বেশি। অবশেষে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের মোবারাকপুর চেরামতি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা প্রাপ্য বেতন পেতে চলেছেন। সম্প্রতি বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। এর আগে হাই কোর্টে বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে ওই শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা ২০০১ থেকে ন্যায্য বেতন পাওয়ার নির্দেশ পেয়েছিলেন। রাজ্য সরকার এ নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে গেলে সেই আবেদন খারিজ হয়েছে।
ওই স্কুলের শিক্ষক রাখাল দাস-সহ এক দল শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী এই মামলা করেন। তাঁদের আইনজীবী এক্রামুল বারি জানান, ২০০১ সালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এই বিদ্যালয়কে নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুমোদন দেয় এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের নির্দেশ দেয়। তার ফলে ওই স্কুলে ‘সংগঠক’ হিসেবে কর্মরত কর্মীরা ন্যায্য বেতন থেকে বঞ্চিত হন। তৎকালীন বিচারপতি অমিতাভ লালার এজলাসে মামলা হয়। আদালত নিযুক্ত অনুসন্ধান অফিসারের রিপোর্টের ভিত্তিতে পর্ষদের ‘নতুন প্রতিষ্ঠান’ সংক্রান্ত নির্দেশিকা বাতিল করে কোর্ট। ওই সংগঠক শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের অনুমোদনের নির্দেশও হয়। সরকার পর্যায়ক্রমে ডিভিশন বেঞ্চ ও সুপ্রিম কোর্টে যায়। শীর্ষ কোর্ট একই নির্দেশ বহাল রাখে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের শিক্ষা অধিকর্তাকে দ্রুত সব তথ্য খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করতে বলে।
আদালতের খবর, শিক্ষা অধিকর্তা হাই কোর্টকে জানান যে, সংগঠক শিক্ষকদের স্থায়ী চাকরির অধিকার নেই। তার ভিত্তিতে ২০১৩ সালে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা মামলা করেন। প্রথমে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ২০১৯ থেকে চাকরির অনুমোদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলাকারীরা আর্জি জানান ২০০১ থেকেই চাকরির অনুমোদন দেওয়ার। সেই আর্জি মঞ্জুর করেন বিচারপতি। কিন্তু রাজ্য ফের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। এক্রামুল জানান, ২২ বছর আইনি লড়াইয়ের পরে এ বার ন্যায্য প্রাপ্য পাওয়ার আশা করছেন মামলাকারীরা।