school

স্কুল বন্ধ করেছিলেন কেন? অভিভাবকদের প্রশ্নের মুখে ধর্মঘটী শিক্ষক-শিক্ষিকারা, গেটে পড়ল তালাও

শুক্রবার ধর্মঘটের পর দিন স্কুলে পৌঁছতেই বিভিন্ন জায়গায় অভিভাবকদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কোথাও বুঝিয়েসুঝিয়ে ঢুকতে পারলেন স্কুলে। কোথাও ডাকতে হল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩ ১৫:২৭
Share:

সকালে বন্ধ করে দেওয়া হয় কেশিয়াড়ির একটি স্কুল। — নিজস্ব চিত্র।

ধর্মঘটের পরের দিন স্কুলে পৌঁছতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অভিভাবকদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন ধর্মঘটী শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কোথাও বুঝিয়েসুঝিয়ে স্কুলে ঢুকতে পারলেন তাঁরা। কোথাও বা ডাকতে হল পুলিশ। শনিবার দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে দেখা গিয়েছে এই ছবি।

Advertisement

শুক্রবার ধর্মঘটের পর, শনিবার হুগলির বলাগড়ের মিলনগড় জিএসএফ প্রাথমিক স্কুলে গিয়েছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অভিযোগ, তাঁদের স্কুলে ঢুকতে দেননি অভিভাবকদের একাংশ। প্রদীপ রায় নামে এক অভিভাবকের অভিযোগ, ‘‘গতকাল স্কুলে এসে দেখি কোনও ছাত্রছাত্রী নেই। ছাত্রছাত্রীদের বোঝানো হয়েছিল যে, স্কুল বন্ধ থাকবে। তাই আজ আমরা তালা দিয়েছি স্কুলে। শিক্ষকদের ঢুকতে দিইনি।’’ অভিভাবকদের ক্ষোভের মুখে পড়ে স্কুলের সামনে দীর্ঘ ক্ষণ গাছতলায় বসে ছিলেন শিক্ষকরা। এর পর খবর দেওয়া হয় বলাগড় থানায়। পুলিশ গিয়ে তালা খুলে দেন। স্কুলে ঢোকেন শিক্ষকরা। বলাগড় ব্লকের স্কুল পরিদর্শক গৌরব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্কুলের সময় পেরিয়ে যাওয়ায় আজ শিক্ষকদের হাজিরা হবে না। তবে শিশুরা মিড ডে মিল পাবে।’’

স্কুলের গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ হয় উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের রাজীবপুর এভি হাই স্কুলে। সেখানে অভিভাবকদের সঙ্গে বিক্ষোভে দেখা যায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং কর্মী-সমর্থকদেরও। যদিও অশোকনগরের যুব তৃণমূল নেতা প্রদীপ সিংহ জানান, তাঁরা বিক্ষোভে ছিলেন না, ঘটনার খবর পেয়ে এসেছেন। স্কুলের প্রধানশিক্ষক বরেনকুমার চট্টোপাধ্যায় জানান, ধর্মঘটকে সমর্থন করায় তাঁরা স্কুলে যাননি শুক্রবার। তবে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। এ নিয়ে বারাসতের মহকুমাশাসক সোমা সাউ বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে শিক্ষকরা যাতে স্কুলে যেতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারা তালা দিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

হাওড়ায় ডোমজুড়ের উত্তর ঝাপড়দহ নোনাকুণ্ড মহাদেব বিদ্যামন্দিরের শিক্ষকদের ঘিরে শনিবার বিক্ষোভ দেখান অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। পরে ডোমজুড় থানার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এই ছবি দেখা গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে। সেখানে শিক্ষকদের স্কুল থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অভিভাবকদের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শিল্পা বসু বলেন, ‘‘আমরা ধর্মঘট করেছিলাম। স্কুলের খাতায় অনুপস্থিত ছিলাম। আমরা এসআই-কে জানিয়েছিলাম আন্দোলনের কথা। উনি নাকি দেখিয়েছেন, স্কুল খোলা ছিল। তা নিয়ে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সেই জন্য প্রথমে কিছুটা হেনস্থা করা হয়। পরে তা মিটমাট হয়ে গিয়েছে।’’ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রাণতোষ মাইতি বলেন, ‘‘ঘটনার খবর পেয়েছি। তেমন বড় কোনও ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষকেরা ক্লাস করেছেন যথা সময়ে। মিড ডে মিলও হয়েছে।’’ কেশিয়াড়ির কুলবনিতে ১৮ জন শিক্ষককে শনিবার স্কুল খুলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির টাঙ্গিপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিক এবং শিক্ষিকাকে স্কুলে না ঢুকতে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার সঙ্গে দলীয় কর্মীরা জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি বাপি হালদার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement