পড়ুয়াদের উপরে শিক্ষক বা শিক্ষিকা মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছেন, এমন অভিযোগ প্রায়ই ওঠে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বার এক শিক্ষক এবং ছাত্র পরস্পরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনলেন। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, ছাত্রের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যাদবপুরের ডিপার্টমেন্ট অব লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফর্মেশন সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক উদয়ন ভট্টাচার্য।
ওই শিক্ষকের অভিযোগ, তাঁর খাতা দেখা থেকে শুরু করে, পরীক্ষার হলে গার্ড দেওয়া পর্যন্ত সব বিষয়েই রাজা মান্না নামে এক ছাত্র তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় এনেছেন। এ ভাবে বারবার অভিযোগ করায় তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাই তিনি পদত্যাগ করতে চাইছেন। ইস্তফা দিতে চেয়ে ইতিমধ্যে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে চিঠিও দিয়েছেন। উদয়নবাবু সোমবার বলেন, ‘‘আমি উপাচার্যকে লিখেছি, আমার উপরে মানসিক অত্যাচার চালানো হচ্ছে। এই অবস্থায় চাকরি করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। যদি আমি অন্য জায়গায় চাকরি পাই, তা হলে এখানকার চাকরি ছেড়ে দেব।’’
রাজার পাল্টা অভিযোগ, তাঁর উপরে মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন উদয়নবাবুই। ক্লাস শুরুর পর থেকেই উদয়নবাবু তাঁর উপরে নানা ভাবে মানসিক পীড়ন চালাচ্ছেন। কে কোন ঐচ্ছিক বিষয় নেবেন, সেটি ছাত্রছাত্রীদেরই ঠিক করার কথা। কিন্তু উদয়নবাবু তাঁকে তাঁর ইচ্ছামতো ঐচ্ছিক বিষয় নিতে দেননি। ‘‘আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে হুমকি দেন উদয়নবাবু। এই নিয়ে আমি ডিন অব আর্টসকে চিঠি দিই,’’ বলেন রাজা। তিনি জানান, ঐচ্ছিক বিষয় বাছাই নিয়ে ওই শিক্ষকের সঙ্গে মনোমালিন্যের জন্য তিনি তাঁর অধীনে গবেষণা করতে চাননি। সেই জন্যও উদয়নবাবু তাঁকে হুমকি দেন। শেষে তিনি বাধ্য হয়ে উপাচার্যকেও চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কারও কাছ থেকেই কোনও বিচার পাননি।
রাজার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উদয়নবাবু। তাঁর দাবি, রাজার অভিযোগ পুরোটাই মিথ্যা। সব কিছু নিয়ম মেনেই করা হয়েছে।
এই নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সহ-উপাচার্য প্রদীপকুমার ঘোষের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘দুই তরফেই অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা অভিযোগ খতিয়ে দেখছি।’’