অবরোধ তুলতে চলল লাঠি

চা-ধর্মঘট ডেকে প্রশ্নে বিরোধীরা

ডুয়ার্সের বানারহাট, গয়েরকাটা, বিন্নাগুড়ি, বীরপাড়া, মাদারিহাট হয়ে যাওয়া বিভিন্ন রাস্তায় সরকারি-বেসরকারি গাড়ি চলেনি। বন্ধ ছিল দোকান-বাজার। অফিস, স্কুল-কলেজে উপস্থিতির হার কম ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০৩:২৮
Share:

অশান্তির জেরে পাহাড় যখন উত্তপ্ত, সেই সময়েই ডুয়ার্স ও তরাইয়ের চা-বাগানে দু’দিনের ধর্মঘট! বামফ্রন্ট, কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা এমন ধর্মঘট ডেকে পাহাড়ের পাদদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেও গরম করে দিয়ে ফায়দা তুলতে চাইল কি না, সেই প্রশ্নই দেখা দিচ্ছে। সরকারকে কোণঠাসা করতে তলে তলে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার হাত শক্ত করার অভিযোগও বিরোধীদের বিরুদ্ধে তুলছে শাসক শিবির।

Advertisement

ন্যূনতম মজুরি-সহ চা-শ্রমিকদের জন্য আরও কিছু দাবিতে মোট ২৯টি ট্রেড ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চের ডাকা ধর্মঘটে মঙ্গলবার বিক্ষিপ্ত নানা অশান্তির ঘটনা ঘটেছে উত্তরের চার জেলায়। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া ডেঙ্গুয়াঝার চা-বাগান থেকে এ দিন সকালে ধর্মঘট সমর্থনকারীরা মিছিল করে গোশালা মোড়ে গিয়ে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। অবরোধ তুলতে পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতির নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী লাঠিচার্জ করে। বাম ও কংগ্রেস-প্রভাবিত ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃত্বের অভিযোগ, মহিলা পুলিশ ছাড়াই মহিলাদের উপরে লাঠি চালানো হয়েছে। ওখানে গ্রেফতার করা হয় ২০ জনকে। ইদুয়াঝাড়ে প্রতিবাদ মিছিল করতে গিয়ে পুলিশের লাঠিতে সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মৃদুল দে, জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য-সহ বেশ কিছু নেতা আহত হয়েছেন বলে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ।

ডুয়ার্সের বানারহাট, গয়েরকাটা, বিন্নাগুড়ি, বীরপাড়া, মাদারিহাট হয়ে যাওয়া বিভিন্ন রাস্তায় সরকারি-বেসরকারি গাড়ি চলেনি। বন্ধ ছিল দোকান-বাজার। অফিস, স্কুল-কলেজে উপস্থিতির হার কম ছিল। তেলিপাড়া ও গয়েরকাটায় অসমগামী ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে ধর্মঘট সমর্থনকারীরা। পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে। কালচিনিতে দু’জন ধর্মঘট সমর্থককে পুলিশ আটক করলে আন্দোলনকারীরা থানায় বিক্ষোভ দেখায়। ধর্মঘট ভাঙতে পুলিশ ও শাসক দলের বাইক বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে আজ, বুধবার রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে তৃণমূল বাদে প্রায় সব রঙের ট্রেড ইউনিয়ন।

Advertisement

কিন্তু এমন সময়ে চা-বাগানে ধর্মঘট কি আদৌ রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয়? সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের জবাব, ‘‘পাহাড়ে গোলমালের সঙ্গে চা-শ্রমিকদের ধর্মঘটের যোগ খুঁজে পাওয়া আর ভাঙড়ের সঙ্গে ভেনেজুয়েলার যোগাযোগ আবিষ্কার করা একই ব্যাপার! ত্রিপাক্ষিক চুক্তি থেকে শুরু করে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েও সরকার কোনওটাই পূরণ করেনি বলে নোটিস দিয়ে ধর্মঘট হয়েছে।’’ সিটুর রাজ্য সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘দুর্জনের ছলের অভাব হয় না! এত দিন ত্রিপাক্ষিক চুক্তি এবং নানা ন্যূনতম বিষয় নিয়ে লাগাতার দাবি জানানোর পরে ধর্মঘট হয়েছে। এতে কী ভাবে মোর্চার হাত শক্ত করা হল?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement