প্রতীকী ছবি।
উচ্চ আদালতের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ ছিল। তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার স্কিৎজ়োফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত এক ছাত্রকে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ দেয়নি। উপরন্তু তাঁর এক বছরের লেখাপড়া নষ্ট করে দিয়েছে। এই নিয়ে মামলায় তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ ওই নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে, ছাত্রটিকে আগামী শিক্ষাবর্ষে নির্দিষ্ট কলেজেই (নীলরতন সরকার) ডাক্তারিতে ভর্তি নিতে হবে।
হাওড়ার জয়পুর থানার হিওপ গ্রামের অভাবী পরিবারের ছাত্র তথাগত ঘোষ ছেলেবেলা থেকে স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত। সেই অবস্থাতেই ২০১১ সালে খালনা রায় রাধাগোবিন্দ ইনস্টিটিউশন থেকে ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। ২০১৮ সালে ডাক্তারি পড়ার সর্বভারতীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তথাগত। প্রতিবন্ধী কোটায় তাঁর নাম ছিল তালিকার ৪২০ নম্বরে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তাঁর ডাক্তারি পড়ার কাউন্সেলিং হয়। তিনি পড়ার সুযোগ পান নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তথাগতের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য জানান, ওই কলেজ-কর্তৃপক্ষ তাঁর মক্কেলকে জানিয়ে দেন, তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ। তাই তাঁকে ভর্তি করানো সম্ভব নয়। ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেতে গত বছর হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম সিংহের আদালতে মামলা করেন তথাগত। বিচারপতি সিংহ গত নভেম্বরে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি নিতে হবে তথাগতকে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতি টন্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে রাজ্য। কয়েক দফা শুনানির পরে ডিভিশন বেঞ্চ কিছু দিন আগে জানিয়ে দেয়, মামলার রায় পরে ঘোষণা করা হবে।
তথাগত এ দিন জানান, বিচারপতি সিংহের নির্দেশের প্রতিলিপি নিয়ে তিনি ওই হাসপাতালের অধ্যক্ষের কার্যালয়ে জমা দেন। হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতিলিপি জমা দেন রাজ্যের ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশনের কার্যালয়েও। কিন্তু তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। কবে কখন ভর্তি নেওয়া হবে, জানানো হয়নি তা-ও। তিনি দাবি করেন, তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ হলেও মানসিক প্রতিবন্ধী নন। একই সঙ্গে তাঁর আরও দাবি, থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক ছাত্র গত শিক্ষাবর্ষে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ‘‘সুপ্রিম কোর্ট যদি দৃষ্টিশক্তিহীনকে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে, রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতরের কর্তারা পারেন না কেন,’’ প্রশ্ন তথাগতের।