এখনও গতি আসেনি বোরো ধান কাটায়। প্রতীকী চিত্র।
লকডাউনে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটায় সমস্যা হতে পারে। তাই যন্ত্রের (কম্বাইন্ড হারভেস্টার) সাহায্য নিতে চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছিল কৃষি দফতর। কিন্তু রাজ্যের চাষিদের কাছে পর্যাপ্ত যন্ত্র নেই। অভাব রয়েছে প্রশিক্ষিত চালকেরও। ফলে, ‘প্রত্যাশিত’ গতি আসেনি বোরো ধান কাটায়। তাই রাজ্যের কৃষি বিষয়ক ‘টাস্ক ফোর্স’ বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অন্য রাজ্য থেকে যন্ত্রের চালক-সহায়ক আনতে পারবেন চাষিরা। এক জেলার কৃষি-শ্রমিকেরাও অনুমতি নিয়ে কাজে যেতে পারবেন ভিন্ জেলায়। তবে সবই করতে হবে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে। সমস্যা হলে দেখবে প্রশাসন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার শুক্রবার বলেন, ‘‘ধান কাটা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী খুবই উদ্বিগ্ন ছিলেন। এখন থেকে যন্ত্র, চালক বা কর্মী আনায় কোনও নিষেধ রইল না। তবে স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কোনও ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। সমস্ত জেলাশাসকদের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।’’ জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতীও বলেন, ‘‘হারভেস্টার যন্ত্র বা চালকদের ভিন্ রাজ্য থেকে আনতে গিয়ে সমস্যা হলে জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’’
রাজ্যে বোরো ধান লাগানো হয়েছে প্রায় ১২ লক্ষ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে পূর্ব বর্ধমানে রয়েছে এক লক্ষ ৭২ হাজার হেক্টর জমি। কৃষি দফতরের হিসেবে, রাজ্যে ১৮% জমির ধান কাটা হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানে তা ২৫%। কিন্তু যে ভাবে মাঝেমধ্যে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে বাকি ধান দ্রুত কাটতে না পারলে সমস্যার সম্ভাবনা প্রবল। ধান কাটা না গেলে, সঙ্কট দেখা দিতে পারে রেশনের চালের জোগানেও। এ সব ভেবেই রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের নেতৃত্বাধীন ওই ‘টাস্ক ফোর্স’ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি প্রশাসন সূত্রের। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চাষিরা এ ব্যাপারে জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তাঁরাই সাহায্য করবেন।’’
আরও পড়ুন: পরিযায়ী থেকে প্রশাসক, বিজেপি রাজ্যপালের কাছে
পঁচিশে বিধি ভাঙার নালিশ বিশ্বভারতীতে
কৃষি দফতর সূত্রের দাবি, রাজ্যে হাজার তিনেক ‘কম্বাইন্ড হারভেস্টার’ রয়েছে। তবে সময়ে ধান কাটা শেষ করতে আরও হাজারখানেক যন্ত্র প্রয়োজন। ওই যন্ত্র চালকদের বেশির ভাগই পঞ্জাব, হরিয়ানার লোক। পূর্ব বর্ধমানে যাঁদের ওই যন্ত্র রয়েছে, তাঁদের মধ্যে জাহাঙ্গির মণ্ডল, সঞ্জয় রায়েরা বলেন, ‘‘স্থানীয় ভাবে চালক মিললেও তাঁরা পেশাদার নন। ফলে, জমির আল বুঝতে না পারা, যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়।’’ যদিও প্রদীপবাবুর দাবি, “বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানেও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হয়েছে। সেগুলি চালু হলে সমস্যা কেটে যাবে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)