গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অবৈধভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়কদের। গ্রেফতারির দায়িত্বে থাকা ওই সিবিআই কর্তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুন। এই মর্মে কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে চিঠি দিল তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস। সোমবার সকালে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম-সহ কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ও প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারির পর চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজ্য রাজনীতিতে। ঘটনার পরেই নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দফতরে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেন মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। চিঠির শেষাংশে তিনি লিখেছেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে আমার দলের পক্ষ থেকে আপনার কাছে অনুরোধ করছি, অবৈধভাবে এই গ্রেফতারির দায়িত্বে থাকা সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুন। কারণ কোনওরকম গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্দেশে বলপূর্বক আমাদের মন্ত্রী-বিধায়কদের গ্রেফতার করেছেন ওই আধিকারিকরা’।
এই চিঠির কপি পাঠানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। যিনি মন্ত্রী-বিধায়কদের গ্রেফতারির পরেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানিয়েছেন, ‘‘ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়দের যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি। কারণ, কলকাতা হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল, কাউকে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না। আদালত জানতে চাওয়ায় আমি বলেছিলাম, আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। আমাদের কাছে এ বিষয়ে সিবিআই কিছু জানতেও চায়নি। কোনও চিঠিও দেয়নি।’’
এই চিঠিতে চন্দ্রিমা সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করেছেন সিবিআই ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী লিখেছেন, ‘সিবিআই একটি স্বশাসিত সংস্থা। যারা স্বতন্ত্রভাবে কাজ করে। কিন্তু আমরা বুঝতে পারছি না যে একজন রাজ্যপাল কীভাবে সিবিআইয়ের মতো সংস্থাকে নির্দেশ দিতে পারেন’। তাঁর আরও আক্রমণ, ‘রাজ্যপাল নির্লজ্জভাবে বিজেপি-র মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন। তিনি পক্ষপাতদুষ্ট এবং প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বারা প্রভাবিত। তাঁর সিবিআই-কে প্রভাবিত করার কোনও অধিকার নেই’।
নারদা কাণ্ডে অন্যতম দুই অভিযুক্ত মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে কেন গ্রেফতার করা হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন চন্দ্রিমা। লিখেছেন, ‘এই মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি-র দুই বিধায়ক মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে কেন গ্রেফতার করা হল না। তাই আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ এই ষড়যন্ত্রের পিছনে রয়েছেন। আমাদের নেতাদের ভাবমূর্তি কলুষিত করতেই এই ধরনের কাজ করা হচ্ছে’। অতিমারি পরিস্থিতিতে ফিরহাদের ভুমিকার কথা উল্লেখ করে চন্দ্রিমা লিখেছেন, ‘করোনা মহামারির পরিস্থিতিতে কলকাতা প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমানে বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের দায়িত্ব থেকে তিনি জনমানসে পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন, তাঁকেও কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা না দেখিয়েই বলপূর্বক গ্রেফতার করা হয়েছে’।