খাদিম মামলার সাক্ষ্য দিতে এসে পরিচিত পুলিশকর্মীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় স্বাতী পালের। মঙ্গলবার আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের বিশেষ আদালতে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
আগে ছিলেন অভিযুক্ত। এখন সাক্ষী। সেই নর্তকী স্বাতী পাল মঙ্গলবার আদালতে জানালেন, তাঁর এক সময়ের সঙ্গী আব্দুর রহমান কুঞ্জি খাদিম-কর্তা পার্থ রায়বর্মণের অপহরণে যুক্ত ছিল।
আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে বিশেষ আদালতের বিচারক অরুণকিরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে স্বাতী এ দিন বলেন, ‘‘২০০১ সালের ৬ জুলাই রহমান (আব্দুর রহমান কুঞ্জি) আমাকে দুবাই থেকে মুম্বইয়ে নিয়ে আসে। তার কয়েক দিন পরে রহমান আবার ওখানে চলে যায়। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি, কোথায় যাচ্ছ? উত্তরে রহমান বলে, ‘খাদিম জুতোওয়ালাকে তুলে আনতে যাচ্ছি’।’’
স্বাতী এ দিন আদালতে হাজির হন খাদিম-কর্তা অপহরণ মামলার দ্বিতীয় পর্যায়ের বিচার প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য দিতে। ২০১৪ সালের মার্চে এই পর্যায়ে তিনি দু’দিন ধরে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। এ দিন স্বাতীর পরনে ছিল ইস্পাত-ধূসর সিল্কের শাড়ি। চোখে দামি রোদচশমা। সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘কয়েক দিন পরে রহমান ফিরে এসে বলে, কাম হো গ্যয়া।’’ স্বাতী আদালতে জানান, রহমান তাঁকে বলেছিল, এই অপহরণের ছক তার ‘বস’ রাজুভাই ওরফে ফারহান মালিকের। অপহরণ পর্ব সেরে ফিরে রহমান তাঁকে নিয়ে বেঙ্গালুরু চলে যায়। তার পরেই স্বাতী বলেন, ‘‘এ-সব কথা কাউকে বললে ‘খুন করে ফেলব’ বলে রহমান আমাকে শাসিয়েছিল।’’
২০০১ সালের ২৫ জুলাই তিলজলার সিএন রায় রোডে খাদিম-কর্তা পার্থবাবুকে অপহরণ করা হয়। প্রথম পর্যায়ের বিচারে ২০০৯ সালের ২০ মে আফতাব আনসারি, আকিব আলি, আব্দুর রহমান কুঞ্জি, সওকত ওরফে আসাবুদ্দিন এবং হ্যাপি সিংহের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড হয়। কিন্তু এই সময়ে আরও সাত জন অভিযুক্ত ধরা পড়েনি। পরে কলকাতা হাইকোর্টে সাজাপ্রাপ্ত পাঁচ জনের তরফে আপিল করা হয়। নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে হাইকোর্ট। এই মামলায় ফেরার সাত জন অভিযুক্ত পরে ধরা পড়ে। তাদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ে। এই পর্যায়ের সাক্ষ্য দিতেই এ দিন আদালতে এসেছিলেন স্বাতী। এ দিন তাঁর সাক্ষ্য শেষ হয়নি।