—প্রতীকী ছবি।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন অনিয়ম সামনে আসে। সেই মতো কড়া পদক্ষেপ করে স্বাস্থ্য দফতর। এ বার ওই প্রকল্পে হৃদ্রোগের চিকিৎসায় কত বার অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি করা যাবে, সেই সম্পর্কেও একটি নিয়ম বেঁধে দেওয়া হল। এর পাশাপাশি, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের পোর্টালে যে সব শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট এবং চিকিৎসার নথি আপলোড করা হচ্ছে, তাতে চিকিৎসকের সই কী ভাবে থাকতে হবে, তা-ও নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারতে অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফির খরচ মেলে না। ওই প্রকল্পে শুধু অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টির খরচ পাওয়া যায়। কিন্তু রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফির জন্য ১০ হাজার এবং অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টির জন্য ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের পর্যবেক্ষণ, অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে, বুকে ব্যথা নিয়ে আসা কোনও রোগীর একাধিক বার অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি করা হয়েছে বলে বিলে উল্লেখ থাকছে। যদিও এক বার করার পরে সচরাচর দ্বিতীয় বার ওই পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয় না। এই জায়গাতেই গোলমাল থেকে যাচ্ছে বলে মত স্বাস্থ্যকর্তাদের। এক কর্তার কথায়, ‘‘বার বার অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি করা হয়েছে দেখেও কিছু করা সম্ভব নয়। কারণ, ওই রোগীর সত্যিই বুকে ব্যথা হয়েছিল কি না, সেটা ধরার তো কোনও উপায় নেই। তাই একটা নির্দিষ্ট নিয়ম করা হয়েছে।’’
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যসাথীর বিল পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, ১০০ জনের অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি হলে ৪০ শতাংশের অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি প্রয়োজন হচ্ছে। কিন্তু বাকি ৬০ শতাংশের মধ্যে একটা বড় অংশের বার বার অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি করা হচ্ছে। এ বার সেই জায়গাটি আটকাতেই নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, এক বার অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি করার পরে সংশ্লিষ্ট রোগীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক না হলে অন্তত পরবর্তী ছ’মাস বা এক বছরের মধ্যে আর স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ওই পরীক্ষা করা যাবে না। যদি একান্ত করতেই হয়, তা হলে কার্ডিয়োলজিতে ডিএম বা ডিএনবি যোগ্যতা রয়েছে, এমন চিকিৎসকদের সুপারিশ থাকতে হবে।
এর সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের আরও পর্যবেক্ষণ, স্বাস্থ্যসাথী পোর্টালে যে সব চিকিৎসা-নথি কিংবা পরীক্ষার রিপোর্ট হাসপাতালগুলি আপলোড করছে, তার অনেকাংশেই নিয়ম মেনে সই থাকছে না চিকিৎসকের। বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, একটি কোনও অক্ষর বা প্যাঁচানো কিছু একটা লিখে ছেড়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। এতে ওই বিলের বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের প্রশ্ন থাকলেও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে চিহ্নিত করতে সমস্যা হচ্ছে। তাই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (এনএমসি) নিয়ম মেনে চিকিৎসকদের পুরো নাম লিখে সই করতে বলা হয়েছে।