শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী তাঁর চাকরির শর্ত লঙ্ঘন করে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় গলা মেলাচ্ছেন বলে অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো এবং তাঁর অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। রাজ্য সরকারের তরফে অবশ্য দাবি করা হচ্ছে, মুখ্যসচিব বিধিভঙ্গ করেননি। বিজেপি ‘হতাশা’ থেকে এই ধরনের অভিযোগ করছে।
নবান্নে বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের আর্থিক অবস্থার বিবরণ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের পাওনা আটকে রাখায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপও দেগেছিলেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছিলেন মুখ্যসচিব। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বৃহস্পতিবার বিধানসভার মিডিয়া সেন্টারে অভিযোগ করেছেন, নবান্নের ওই সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সরকারের ঋণের তুলনামূলক আলোচনার সূত্রে মুখ্যসচিব কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন। কেন্দ্রীয় ক্যাডারের আধিকারিক হয়ে যা করা নিয়ম বহির্ভূত বলে বিরোধী দলনেতার দাবি। সাংবাদিক বৈঠকের একটি ক্লিপও দেখিয়েছেন শুভেন্দু। ওই ক্লিপের বক্তব্যের ইংরেজি অনুবাদ জুড়ে বিরোধী দলনেতা চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের ডিওপিডি সচিব, ক্যাবিনেট সচিব এবং অর্থ সচিবকে।
শুভেন্দুর দাবি, ‘‘এক জন আধিকারিক যিনি কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া এক্সটেনশন পেয়ে কাজ করছেন, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ। তিনি নিজের কর্মজীবনের যাবতীয় শর্ত উল্লঙ্ঘন করে কেন্দ্রীয় সরকার-বিরোধী মন্তব্য করেছেন। এটা নিয়ম বহির্ভূত।’’ প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের অনুমোদনের ভিত্তিতে মুখ্যসচিবের পদে থাকার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। চেষ্টা করেও অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ দিন মুখ্যসচিবের বক্তব্য জানা যায়নি। তবে রাজ্যের অর্থ দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক কর্মসূচি আগে থেকেই ঘোষণা করেছিলেন ফিরহাদ হাকিম ও তাপস রায়। মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাপ্রসঙ্গে সেটার পুনরাবৃত্তি করেছেন মাত্র। মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠক ছিল কেন্দ্রের বঞ্চনা ও আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে। মুখ্যসচিব সেটাই ব্যাখ্যা করেছেন, যেটা রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি। ফলে, বিধিভঙ্গের কোনও বিষয় নেই।’’
বিরোধী দলনেতা বলেছেন, ‘‘তিনটি মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়ে মুখ্যসচিবকে শো-কজ়ের দাবি জানিয়েছি। সঙ্গে অবসরের পরে তাঁর সমস্ত সুযোগ-সুবিধা যাতে কাটছাঁট করা হয়, সেই দাবিও করেছি।’’ মন্ত্রী চন্দ্রিমার কটাক্ষ, ‘‘ওরা হতাশায় ভুগছে। তা যদি না হয়, তা হলে ইডি-সিবিআই কী করবে, সেটা আগে থেকে ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে কেন? যোগসাজশ তো প্রমাণিত!’’