সোমবার বিকেলে মুকুলের বিধায়কপদ খারিজ নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন শুভেন্দু। ফাইল চিত্র।
মুকুল রায়ের বিধায়কপদ খারিজ নিয়ে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। স্পিকারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শীর্ষ আদালত শুভেন্দুকে ভর্ৎসনা করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলে। সেই মোতাবেক সোমবার হাই কোর্টে এই বিষয়ে আবেদন জানালেন বিরোধী দলনেতা। এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শুভেন্দুর আইনজীবী। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি সিঙ্গল বেঞ্চে পাঠায়। প্রধান বিচারপতি জানান, সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে মামলাটি ‘রিলিজ’ হওয়ার পর ডিভিশন বেঞ্চ শুনবে।
মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব বিজেপি। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর-উত্তর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন মুকুল। কিন্তু, ১১ জুন তৃণমূল ভবনে গিয়ে বিজেপি ছেড়ে শাসকদলে যোগ দেন। তার পর থেকেই তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে কখনও স্পিকার, কখনও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি পরিষদীয় দল। ‘দলত্যাগী’ মুকুলকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান করার বিরোধিতা করে একটি পৃথক মামলাও সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হয়েছিল বিজেপির তরফে। সে সময়েও শীর্ষ আদালত শুভেন্দুকে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার ‘পরামর্শ’ দেয়। মুকুলের বিধায়কপদ খারিজ নিয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবারও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ায় তাঁকে ভর্ৎসনা করেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী এবং সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। হাই কোর্টকে এড়িয়ে কেন তিনি বার বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
গত ৮ জুন স্পিকার বিজেপির মুকুল রায়ের বিধায়কপদ বাতিলের আবেদন খারিজ করে দেন। এই বিষয়ে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করে তিনি জানিয়েছিলেন, মুকুল এখনও বিজেপিতেই রয়েছেন। তাই তিনি বিজেপিরই বিধায়ক। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কোনও প্রমাণ নেই। গত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে ভোট দিতে এসে মুকুল অবশ্য দাবি করেছিলেন, তিনি তৃণমূল বিধায়ক। তার জেরে অস্বস্তিতে পড়েছিল শাসকদল। শুভেন্দু অভিযোগ করেছিলেন, সংবিধানের দশম তফসিল পশ্চিমবঙ্গে অনুসৃত হয় না। সংবিধানের দশম তফসিল অনুসারে, কোনও বিধায়ক দলবিরোধী আচরণ করছেন কি না, এবং সেই কারণে তাঁর সদস্যপদ খারিজ হবে কি না, তা নির্ধারণের চূড়ান্ত অধিকার স্পিকারের। অর্থাৎ, কোনও বিধায়কের কার্যকলাপ ‘দলত্যাগ’-এর সমতুল হবে কি না, তা স্থির করবেন স্পিকার।