বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
এ বার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মুখেও রাজা পালের নাম। কয়লা চুরি আটকাতে ইসিএলের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের প্রধান ছিলেন সংস্থার তৎকালীন চিফ অব সিকিওরিটি রাজা। সম্প্রতি কয়লা চুরির একটি মামলায় আসানসোল আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দিয়েছে সিআইডি। শুভেন্দু সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে দাবি করেলেন, গোপন জবানবন্দিতে রাজা তৃণমূল নেতাদের নাম করাতেই সিআইডি-র এই পদক্ষেপ। যদিও, বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দু বলেন, “ইসিএলের প্রাক্তন নিরাপত্তা আধিকারিক রাজা পালকে দিয়ে বিচারকের সামনে গোপন জবানবন্দিতে সিআইডি আমাদের তিন জন নেতৃত্বের নাম বলানোর চেষ্টা করেছিল। পারেনি। বদলে, এমন কিছু তৃণমূল নেতার নাম উল্লেখ করেছেন যে, বিপদ বুঝে সিআইডি মামলাটি আদালতের কাছে বন্ধ করার আবেদন করেছে। আমরা সহজে বিষয়টি ছাড়ছি না। শেষ দেখে ছাড়ব।”
বিষয়টি নিয়ে, বর্তমানে কোল ইন্ডিয়ার অধীনস্থ মহানদী কোলফিল্ডস লিমিটেডে (এমসিএল) কর্মরত, সেনাবাহিনীর প্রাক্তন মেজর রাজার বক্তব্য, “গোপন জবানবন্দির বিষয়টি আদালতের এক্তিয়ারভুক্ত। তাই আমি কী বলেছি, বলতে পারব না।” তবে তাঁর সংযোজন, “আমি কিছু নামের কথা জানিয়েছিলাম।” কাদের নাম, তা সংবাদমাধ্যমের কাছে ভাঙেননি রাজা।
ঘটনা হল, ইসিএল কয়েক বছর আগে চরণপুর রেল সাইডিং থেকে ১,৮১৭ টন কয়লা চুরির অভিযোগ করেছিল বারাবনি থানায়। সে মামলার তদন্তে নেমে কয়েক জনকে গ্রেফতারও করে সিআইডি। তাতেই গোপন জবানবন্দি দেওয়ানো হয় রাজাকে দিয়ে। শুভেন্দুর দাবি, “রাজ্যের অঙ্গুলি-হেলনে আমাদের নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি, সুব্রত মিশ্র এবং বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীকে এই মামলায় জড়াতে চেয়েছিল সিআইডি।” পাশাপাশি, অন্ডাল থানায় দায়ের হওয়া কয়লা চুরির একটি মামলার প্রেক্ষিতে ওই তিন নেতাকে সিআইডি ডেকে পাঠায়। তবে জিতেন্দ্রের আবেদনের প্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ, কয়লা চুরির মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। তাই সেখানে সিআইডি আলাদা করে তদন্ত করতে পারবে না। সম্প্রতি, বারাবনি থানায় দায়ের হওয়া মামলাটির চূড়ান্ত রিপোর্ট আসানসোল সিজেএম আদালতে জমা দিয়েছে সিআইডি। সূত্রের দাবি, রিপোর্টে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার মতো তথ্য-প্রমাণ মেলেনি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই রিপোর্টের বিরোধিতা করে ‘পিটিশন’ জমা দিয়েছে ইসিএল। রাজাও বলেন, “শুনেছি সিআইডি চূড়ান্ত রিপোর্ট দিয়েছে। তার বিরোধিতা করেছি। আমরা চাই, তদন্ত চলুক।”
তবে বিরোধী দলনেতার বক্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “ভিত্তিহীন কথাবার্তা। আর তা ছাড়া, আদালতে কে কী বলছেন, তা বিরোধী দলনেতার জানার কথা নয়। আমাদের দলের কেউ কোনও তদন্তে যে ভয় পান না, কেন্দ্রীয় এজেন্সির উদ্দেশ্যমূলক তৎপরতার মধ্যেও তা স্পষ্ট।”