বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি। ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় একটি সমবায় দখল করেছে বিরোধী জোট। তার প্রেক্ষিতে তলে তলে বাম-বিজেপি সমঝোতার জল্পনাও শুরু হয়েছে। এত দিন শুভেন্দুও তৃণমূলকে হারাতে বাম সমর্থকদের বিজেপির হাত ধরার আহ্বান জানাতেন। সেই শুভেন্দুর গলাতেই এ বার উল্টো সুর। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার রাইপুরের সভায় বিরোধী দলনেতার মন্তব্য ‘‘বিজেপি ‘রিয়েল অপোজিশন’। ‘সেটিং’ করা বিরোধী নয়। পার্থ, অপা, কেষ্ট, মানিক জেলে। তাই এখন অমিয় পাত্র মিছিল করতে বেরিয়ে পড়েছেন। ১১ বছর দেখা-সাক্ষাৎ নেই। এই দু’-তিন মাস লাল ঝান্ডা নিয়ে খুব লম্ফঝম্প। বিজেপি হ্রদ কাটবে, আর তুমি কই খাবে সিপিএম?’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্রের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘ওরা যদি রিয়েল অপোজিশন হয়, তা হলে সারদা-নারদা তদন্তের এই হাল কেন? সেখানে সিপিএমের আইনজীবীরাই কিন্তু লড়ছেন।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, পূর্ব মেদিনীপুরে বামেরা শক্তিশালী হলে সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসাতে পারে। যাতে তৃণমূলের সমস্যা বাড়বে। কিন্তু জঙ্গলমহলে বামেদের শক্তিবৃদ্ধি বিজেপির আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসাতে পারে। তাই শুভেন্দুর গলায় এখানে অন্য সুর। এ দিন বিরসা মুন্ডার জন্মজয়ন্তীতে বাঁকুড়ায় শুভেন্দু, পাশাপাশি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সভা করলেন ঝাড়গ্রামে। দু’জনেই আদিবাসী-মূলবাসীদের বঞ্চনার অভিযোগে সুর চড়ালেন। এক ধাপ এগিয়ে তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ‘উলগুলানে’রও (বিপ্লব) ডাক দিলেন শুভেন্দু।
এ দিন বাঁকুড়ার রাইপুরে প্রথমে মিছিল করেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। তার পর সভা থেকে ‘জঙ্গলমহলকে জাগানো’র ডাক দেন তিনি। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘বেলপাহাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, তিনি বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে ছুটি দিয়েছেন। কিন্তু জঙ্গলমহল ছুটি চায় না। চাকরি চায়।’’ বাম আমলে মমতাকে জঙ্গলমহলের রাস্তা তিনিই চিনিয়েছেন দাবি করে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, ‘‘যেমন তোমাকে হারিয়েছি ২০২১-এ, আগামী দিনে এখানে ডবল ইঞ্জিন সরকার তৈরির শপথ নিচ্ছি।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত সভা করেন ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়ায়। তার আগে মধ্যাহ্নভোজ সারেন জনজাতি গোষ্ঠীর এক কর্মীর বাড়িতে। সাংসদ দিলীপ ঘোষের বাড়িতে যান সুকান্ত। পরে অখিল-মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁর বার্তা, ‘‘উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আদিবাসী সমাজকে তিরধনুক নিয়ে রাস্তায় নামতে বলেছেন। অদিবাসী সমাজেরও উচিত তৃণমূলের নেতারা বাড়িতে থেকে বেরোলে তিরধনুক নিয়ে নামা, যতক্ষণ না অখিল গিরিকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হচ্ছে।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু পাল্টা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে যেখানে অনুতপ্ত, সেখানে এটা নিয়ে জলঘোলা করার মানে হয় না।’’