মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়ায় কর্মসূচি নেওয়ার পরামর্শ দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়ায় কর্মসূচি নেওয়ার পরামর্শ দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দলীয় নেতাদের এই বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি শুভেন্দু জানিয়েছেন, প্রয়োজনে তিনি নিজেও থাকবেন ওই কর্মসূচিতে। যদিও তৃণমূল একে ‘পাগলের প্রলাপ’ বলে মন্তব্য করেছে।
কলকাতার ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ আলিপুর এলাকার রাজস্থান ভবনে মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের প্রবাস কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু। সূত্রের খবর, সেখানে তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেকের পাড়ার সাধারণ মানুষ তৃণমূলের উপরে বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ। কিন্তু বিকল্প হিসেবে কাউকে না পাওয়ায় তাঁরা ‘ভয়ে’ মুখ খুলতে পারছেন না। এর পরেই তিনি দলীয় নেতৃত্বকে ওই এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি বাড়াতে বলেন। তিনি জানান, নির্বাচনের সময়ে এক বার করে প্রচার করলে চলবে না। সারা বছর ওই এলাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে হবে। তবেই মানুষ ভরসা পাবেন। না হলে একটা ওয়ার্ডেও জেতার মতো জায়গায় থাকা যাবে না। সেই সঙ্গে তিনি কর্মীদের আশ্বস্ত করে জানান, যদি ভয়ের পরিবেশ থাকে, প্রয়োজনে তিনি নিজে যাবেন ওই এলাকায় প্রচার করতে। প্রসঙ্গত, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভা-ভিত্তিক ফলাফলের নিরিখে মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্র ভবানীপুরে সামান্য ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বিজেপি। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচন এবং উপনির্বাচনে, এমনকি, কলকাতা পুরসভা নির্বাচনেও এই বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি বিপুল ভোটে পিছিয়ে পড়ে। পাশাপাশি শুভেন্দু দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায়ের সঙ্গে রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বিরোধের প্রসঙ্গ টেনে জানান, যে জায়গাগুলিতে তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে সমস্যা রয়েছে, সেই এলাকায় বিজেপিকে রাজনৈতিক ভাবে জমি তৈরি করতে হবে।
তৃণমূল অবশ্য একে গুরুত্ব দিতে চায়নি। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, ‘‘শুভেন্দু ব্যক্তিকেন্দ্রিক, প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন। যে দিন বিজেপি গাড্ডায় পড়বে, সে দিন উনিই প্রথম দুয়ারে সরকারের ফর্ম ভরে মমতাদি’র কাছে তৃণমূলে ফেরার আবেদন করবেন! তাই আগে থেকে বাড়ির সামনে ঘুরঘুর শুরু করতে চাইছেন!”
অন্য দিকে, ‘তৃণমূলের নব জোয়ার কর্মসূচি’র মাঝপথেই রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার ‘গ্রাম সম্পর্ক অভিযানের’ দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হবে। এ বার তারা এই কর্মসূচির নাম দিয়েছে ‘পঞ্চায়েত পদযাত্রা’। রাজ্যে ৪০ দিন ধরে দু’শোটি বিধানসভা এলাকায় ঘুরবেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ। আসতে পারেন সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্যও। প্রতিদিন এক একটি গ্রাম সংসদ এলাকায় পাঁচ কিলোমিটার পদযাত্রা হবে। হাট-সভা ও চাটাই বৈঠকও হবে। উত্তরবঙ্গে জলপাইগুড়ির মোহনভিটা, জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রামের আশাকাঠি ও গঙ্গাসাগরের চেমাগুড়ি বাজার থেকে একযোগে কর্মসূচি শুরু হবে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে কর্মসূচি শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।