জনসংযোগ যাত্রায় শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
স্থান: নয়াগ্রামের খড়িকামাথানি মার্কেট কমপ্লেক্স।
উপলক্ষ: লোকসভা ভোটের ফলের ময়না-তদন্ত।
হাজির: ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
প্রধান বক্তা: শুভেন্দু অধিকারী।
কী হল আলোচনা? তৃণমূল সূত্রের খবর, রবিবার ওই বৈঠকে একাধিক জেলা নেতা জানান, ঝাড়গ্রামে দক্ষ নেতার অভাবে ভুগছে দল। কেউ কেউ এমনও দাবি করেন, শুভেন্দুকে ভোটের আগে পেলে জঙ্গলমহলে হারতে হত না। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘শুভেন্দুবাবু নিজেও বলেছেন, এমন পরিস্থিতি আঁচ পেলে তিনি জঙ্গলমহলে প্রচারে আসতে পারতেন।’’ প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের আগে ঝাড়গ্রাম জেলার দায়িত্ব ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর। যুগ্ম ভাবে দায়িত্ব পেেয়ছিলেন শুভেন্দুও। তবে ভোট প্রচার পর্বে ঝাড়গ্রামে সেভাবে দেখা যায়নি তাঁকে। খারাপ ফলের পর ঝাড়গ্রাম-সহ গোটা জঙ্গলমহলের দায়িত্ব একক ভাবে শুভেন্দুর উপর সঁপেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত কয়েক বছরে ঝাড়গ্রামে সে ভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেখা যেত না শুভেন্দুকে। নয়া দায়িত্বপ্রাপ্তির পর পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ জঙ্গলমহলের অন্য জেলাগুলিতে গেলেও এতদিন তাঁকে দেখা যায়নি ঝাড়গ্রামে।
ভোটের পর এ দিনই প্রথম এসে কী বললেন শুভেন্দু? তৃণমূল সূত্রের খবর, পরিবহণমন্ত্রী যা বলেছেন, তার সারমর্ম হল—‘যাবতীয় আড়ম্বর দূরে সরিয়ে রেখে শুধুমাত্র জোর দিতে হবে সংগঠনের উপর’। কেন তা করতে হবে কর্মী, সমর্থকদের তা বোঝাতে গিয়ে শুভেন্দু জানিয়ে দিয়েছেন, শুধু উন্নয়ন দিয়ে ভোটে জেতা যায় ঝাড়গ্রাম লোকসভা ভোটের ফল থেকে তা স্পষ্ট। তাই জনসংযোগের মাধ্যমে সংগঠন পোক্ত করা ছাড়া উপায় নেই। কী করতে হবে জনসংযোগ তাও বাতলে দিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর পরামর্শ—পাশে থাকার আবেদন জানিয়ে ঝাড়গ্রামের সব মানুষের কাছে দলনেত্রীর সই করা চিঠি পাঠানো হবে। এ দিন দলের পূর্ণাঙ্গ জেলা কোর কমিটি, অঞ্চল এবং ব্লকের যুব সংগঠন, অন্য শাখা সংগঠন ও আদিবাসী ও অন্য জনজাতিদের নিয়ে নতুন করে কমিটি তৈরি করতে বলেছেন তিনি। ৭ জুলাই ঝাড়গ্রামের রবীন্দ্র পার্কে ফের বৈঠক করবেন শুভেন্দু।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন প্রথমেই কোথায় কোথায় দল পিছিয়ে আছে এবং কেন পিছিয়ে আছে সেটা জানতে চান শুভেন্দু। ভোটের পরে কোথায় কোথায় অশান্তি হচ্ছে তার খোঁজও নেন। জঙ্গলমহলে হারের কারণ ব্যাখ্যায় শুভেন্দু জানান, সরকারি অনুষ্ঠানের চেয়ে দলের কর্মসূচি কম হওয়ায় সংগঠন নিস্তেজ হয়েছে। বৈঠকে উঠে আসে দলের সঙ্গে পঞ্চায়েতগুলির সমন্বয় না থাকার কথা। শুভেন্দু জানান, কুড়মিদের জন্য সরকার অনেক কাজ করলেও তাঁদের ভোট তৃণমূলে আসেনি। এর কারণ খুঁজতে কুড়মি সমাজের মানুষদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বৈঠক শেষেই জনসংযোগ। মার্কেট কমপ্লেক্স থেকে খড়িকামাথানি বাজার পর্যন্ত জন সংযোগ যাত্রা করেন শুভেন্দু। ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল, জেলা তৃণমূল সভাপতি বীরবাহা সরেন প্রমুখ।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।