(বাঁ দিক থেকে) দাড়িভিটে নিহত ছাত্রের ভাই, নন্দীগ্রামে নিহত বিজেপি কর্মীর পৌত্র এবং শুভেন্দু অধিকারী। — নিজস্ব চিত্র।
দাড়িভিটকাণ্ড এবং লোকসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তিন নিহতের পরিবারকে চাকরি দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। চাকরি পেলেন দাড়িভিটে নিহত ছাত্রের ভাই সুজিত সরকার, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে ডায়মন্ড হারবারে নিহত ভোলানাথ মণ্ডলের স্ত্রী রূপালি মণ্ডল এবং গত লোকসভা নির্বাচনের সময়ে নন্দীগ্রামে হিংসায় নিহত বিজেপি কর্মী রথিবালা আড়ির নাতি অভিজিৎ আড়ি। বিধানসভায় এই তিন জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী দলনেতা প্রতি বছর বিধানসভায় নিজের দফতরে তিন জনকে চাকরি দিতে পারেন। এ বছর সেই চাকরি দেওয়া হল দাড়িভিটকাণ্ডে নিহত ছাত্রের পরিবার এবং লোকসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় হিংসায় নিহত দু’জনের পরিবারের সদস্যকে। দাড়িভিটে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল ২০১৮ সালে। শুভেন্দু সেই সময় ছিলেন তৃণমূলে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দাড়িভিটের ঘটনা যে সময়ে ঘটেছিল, তখন আমি তৃণমূলে ছিলাম। কিন্তু সৌভাগ্যবশত, ওই পরিবারের সদস্যকে চাকরি দেওয়ার সুযোগ আমিই পেলাম।’’
বৃহস্পতিবারই নিহতদের পরিবারের তিন সদস্য বিধানসভায় চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। যে চাকরি তাঁদের দেওয়া হয়েছে, তা রাজ্য সরকারি চাকরি। গ্রুপ ডি কর্মী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁদের। রাজ্য সরকার এই তিন জনকে বেতন দেবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট হাই স্কুল। অবরোধ, লাঠিচার্জ, ইট-পাথর ছোড়া থেকে শুরু করে বোমা-গুলিও চলে বলে অভিযোগ। ওই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণ নামে দুই প্রাক্তন ছাত্রের। সুজিতের ভাই চাকরি পেলেন। এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ করেন স্থানীয়েরা। যদিও পুলিশ ওই অভিযোগ অস্বীকার করে। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবিতে তাঁদের পরিবার এবং এলাকাবাসীর একাংশের আন্দোলনে প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ ছিল দাড়িভিট স্কুল। এখনও সেই সংক্রান্ত মামলা কলকাতা হাই কোর্টে বিচারাধীন।
লোকসভা নির্বাচনে তমলুকে ভোটের আগে গত ২৩ মে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল নন্দীগ্রাম। সেখানে বিজেপি কর্মী রথিবালাকে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। হামলা হয় তাঁর পুত্রের উপরেও। অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। যদিও তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। পুত্রকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন রথিবালা। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনা নিয়েও হাই কোর্টে মামলা হয়। তাঁর নাতি চাকরি পেলেন। এ ছাড়া, ডায়মন্ড হারবারে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে অশান্তিতে মৃত্যু হয়েছিল ভোলানাথের। তাঁর স্ত্রীকেও বিধানসভায় চাকরি দিলেন বিরোধী দলনেতা।