শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
‘ক্যাডার’ নীতিকে সামনে রেখে চার জেলাশাসককে ইতিমধ্যেই বদলি করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে এ বার মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব-সহ কয়েক জন অফিসারের পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার এক্স হ্যান্ডলে শুভেন্দুর অভিযোগ, নিয়োগের প্রশ্নে প্রথা বা রীতি মানেনি রাজ্য। ২০১৭ সালের ক্যাডার শক্তি মূল্যায়নের প্রসঙ্গ টেনে তাঁর দাবি, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনাক্রমে কেন্দ্রের কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ (ডিওপিটি) দফতর বিভিন্ন ‘ক্যাডার পোস্টে’ (আইএএস বা আইপিএস অফিসারদের জন্য নির্দিষ্ট পদ) কী ধরনের নিয়োগ হবে, তা চূড়ান্ত করেছিল। সেটা মানা হয়নি।
সমাজমাধ্যমে শুভেন্দু অভিযোগ করেছেন, ভোটের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত সেই পদগুলিতে অন্যায্য ভাবে নিয়োগ করেছে রাজ্য। তাঁর দাবি, স্বরাষ্ট্রসচিব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অফিসারকে ১৭ নম্বর স্তরে (লেভেল ১৭) থাকতে হয়। অথচ বর্তমান স্বরাষ্ট্রসচিব এখন ১৫ নম্বর স্তরে আছেন। উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলির জেলাশাসক, মেদিনীপুর ডিভিশনের কমিশনার, ভূমিনথি অধিকর্তা, কলকাতার পুর কমিশনার ও আবগারি কমিশনারের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম না মানার অভিযোগে কমিশনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন শুভেন্দু।
সম্প্রতি পুলিশের ডিজি পদ থেকে রাজীব কুমারকে অপসারণের পরে বিবেক সহায় সাময়িক ভাবে ডিজি হন। সিনিয়র হওয়া সত্ত্বেও বিবেককে স্থায়ী ডিজি করেনি কমিশন। কারণ, ভোটে শেষ হওয়ার আগে (৩১ মে) তিনি অবসর নেবেন। শুভেন্দুর দাবি, মুখ্যসচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকাও ৩১ মে অবসর নেবেন। তাই তাঁর ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ করা উচিত।
নবান্নের তরফে শুভেন্দুর বক্তব্যের সরকারি প্রতিক্রিয়া মেলেনি। প্রবীণ আমলাদের অনেকে দাবি করছেন, নিয়োগের প্রশ্নে রীতি নিখুঁত ভাবে মান্যতা পাচ্ছে না। বহু পদ, যা আদতে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পদমর্যাদার অফিসারদের জন্যই নির্দিষ্ট, সেখানে অনেক জুনিয়র অফিসারকে বসানো হয়েছে। আইএএসদের জন্য নির্দিষ্ট পদে আইপিএসদের নিযুক্ত করা হচ্ছে। সেই সব পদ অবশ্য নির্বাচনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষদের মতে, এই ক্যাডার নীতিকে সামনে রেখেই সম্প্রতি জেলাশাসক পদে বদলি করেছে কমিশন। কারণ, কমিশনের বিচারে জেলাশাসক পদটি ‘ক্যাডার’-ভুক্ত অর্থাৎ আইএএসদের জন্যই নির্দিষ্ট। পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব বর্ধমান এবং বীরভূমের জেলাশাসকেরা ডব্লিউবিসিএস (এগ্জ়িকিউটিভ) বা রাজ্যের সার্ভিসের আওতাভুক্ত। তবে বীরভূমের জেলাশাসককে আগে কমিশন ভোটে বদলি করেছিল।