শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: পিটিআই।
সিএজি-বিতর্ক অব্যাহত থাকল রাজ্য বাজেট নিয়ে হওয়া আলোচনা পর্বেও। অভিযোগ, বিপুল অর্থের শংসাপত্র এখনও জমা দেয়নি রাজ্য। সেই সূত্র ধরেই শনিবার সরকার পক্ষের তোলা কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগের পাল্টা হিসেবে বিরোধী পক্ষ দাবি করল, বিগত ইউপিএ সরকারের তুলনায় বর্তমান সরকারের আমলে রাজ্যের বরাদ্দ বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি। একই সঙ্গে এ দিন একশো দিনের কাজে ‘অন্যায্য’ জব কার্ড নিয়ে শাসক পক্ষকে নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
একশো দিনের কাজ এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বরাদ্দ বন্ধ নিয়ে বাজেটে কেন্দ্রীয় নীতির সমালচনায় সরব হয় রাজ্য সরকার। ১০০ দিনের কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি মেটানোর কথাও বাজেটে জানায় রাজ্য। আবাস প্রকল্প নিয়ে এক মাস অপেক্ষা করে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। কর্মশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে জব কার্ড থাকা শ্রমিকদের অন্তত ৫০ দিন কাজ নিশ্চিত করার দাবিও করেছে রাজ্য। বাজেট আলোচনায় ওই সব ঘোষণার বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। শুভেন্দুর অভিযোগ, জব কার্ডের সঙ্গে আধার যোগের আগে রাজ্যে সেই সংখ্যা ছিল প্রায় ৩ কোটি ৮৮ লক্ষ। আধার যোগের পরে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ কার্ড বাদ গিয়েছে। তার মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৫ লক্ষ এবং মুর্শিদাবাদে ১৩ লক্ষ কার্ড বাদ গিয়েছে। শুভেন্দুর দাবি, কেন্দ্রে ইউপিএ সরকারের আমলে রাজ্য পেয়েছিল প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা। এনডিএ তথা বিজেপি সরকারের আমলে সেই বরাদ্দ ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। তার মধ্যে একশো দিন, আবাস, গ্রাম সড়ক-সহ একাধিক প্রকল্পের কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বেড়েছে বেশ কয়েক গুণ করে।
শুভেন্দুর মন্তব্য, ‘‘এই প্রথম রাজ্যপালকে বক্তৃতার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বাজেট বক্তৃতা নিয়ে রাজনীতি হয়েছে।’’ জবাবে চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘কর্মশ্রী বিভিন্ন দফতরের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। দফতরের বরাদ্দ ভাগ করে দেওয়া আছে।’’ সিএজি রিপোর্টকে কেন্দ্র করে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘শংসাপত্র বকেয়া থাকলে পরের বছরের টাকা কী করে দিয়েছে কেন্দ্র? ২২ বছরের হিসাব? রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত নয়।’’
তবে শুভেন্দু বাজেটের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দাবি করেছেন, পেট্রল-ডিজ়েলে সেস মকুব বা ছাড় দিক রাজ্য। এ রাজ্য সরকার ছ’লক্ষ স্থায়ী পদ অবলুপ্ত করেছে। তফসিলি জাতি, জনজাতি, অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণ কার্যকর করে সব শূন্য পদ পূরণ করা হোক। পি এম কিসান প্রকল্পে কেন্দ্রের ছ’হাজারের সঙ্গে আরও ছ’হাজার যুক্ত করে ১২ হাজার টাকা দেওয়া হোক কৃষকদের। সঙ্গে আয়ুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা এবং উজ্জ্বলা যোজনা কার্যকর করার সঙ্গে বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ ৬০ লক্ষের বদলে ২ কোটি টাকা করার দাবি জানান শুভেন্দু। যদিও চন্দ্রিমা বলেছেন, ‘‘২ কোটি জীবিকার সংস্থান করা হয়েছে রাজ্যে। ১ কোটি ৭২ লক্ষ মানুষ দারিদ্র থেকে মুক্ত হয়েছেন।’’