মঙ্গলবারই শুভেন্দু অধিকারীকে ‘আলুভাতে মার্কা’ নেতা বলে কটাক্ষ করেছিলেন কুণাল ঘোষ। ফাইল চিত্র।
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ শুনে বিস্মিত তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু মঙ্গলবার রাতে ধারাবাহিক তিনটি টুইটে জানিয়েছেন, কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশ অমান্য করে তাঁকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। পাল্টা আর একটি টুইট করে কুণাল জানতে চেয়েছেন, এ কথা তিনি আগে বলেননি কেন? কুণালের প্রশ্ন, ‘কাল তো আমরা সবাই দেখলাম উনিই ‘‘আমাকে গ্রেফতার করুন’’ বলে চিৎকার করছেন। তখন কেন বলেননি, আমার কাছে কোর্টের নির্দেশ আছে। আমাকে গ্রেফতার করবেন না!’
মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযানের তিনটি মিছিলের একটিতে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল শুভেন্দুর। সাঁতরাগাছি থেকে সেই মিছিল শুভেন্দুর নেতৃত্বে পৌঁছনোর কথা ছিল নবান্নে। শুভেন্দু গাড়িতে সাঁতরাগাছি যাওয়ার পথেই তাঁকে পিটিএসের কাছে আটকে দেয় হেস্টিংস থানার পুলিশ। পরে দেখা যায় শুভেন্দু বার বার পুলিশকে বলছেন তাঁকে গ্রেফতার করতে। এমনকি তাঁকে গ্রেফতার করা প্রসঙ্গে উপস্থিত পুলিশ কর্তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের থেকে অনুমতি নেওয়ার কথাও বলতে শোনা যায় শুভেন্দুকে। এর পর শুভেন্দু গ্রেফতার হন। নিজে হেঁটে প্রিজন ভ্যানেও ওঠেন। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ছাড়া পাওয়ার পর রাতে টুইটারে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা। পাল্টা টুইটারে সেই ঘটনাপ্রবাহের কথাই শুভেন্দুকে মনে করিয়ে দিয়েছেন কুণাল।
মঙ্গলবার সন্ধে ৬টার কিছু পর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ব্যক্তিগত জামিনে ছাড়া পান শুভেন্দু-সহ নবান্ন অভিযানে গ্রেফতার হওয়া বিজেপির অন্য নেতারা। রাত ১০টা নাগাদ তিনটি ধারাবাহিক টুইট করেন শুভেন্দু। তার মধ্যে দু’টি ভিডিয়ো। ভিডিয়োয় শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানোর পর আমার বিরুদ্ধে অন্তত ৩০টি মামলা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আদালতের দ্বারস্থ হলে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছিলেন, আমার বিরুদ্ধে কোনও কড়া আইনি পদক্ষেপ করা যাবে না। অথচ হাই কোর্টের সেই নির্দেশ অমান্য করে, ১৪৪ ধারা জারি নেই এমন এলাকা থেকে আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
তিনটি ধারাবাহিক টুইটে শুভেন্দু এ-ও দাবি করেছেন যে, মহিলা পুলিশ অফিসাররা তাঁকে নিগ্রহ করেছেন। এমনকি পুলিশ হেফাজতে তাঁকে মানসিক অত্যাচার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিরোধী দলনেতা। এই সমস্ত অভিযোগে বিস্মিত কুণাল জানতে চেয়েছেন, কাল তো ওঁকে এমন যুক্তি দিতে শোনা যায়নি। তিনি লিখেছেন, বরং শুভেন্দু ‘হাল ছেড়ে কিছুটা ময়দান ছেড়ে পালানোর মেজাজেই নিজে গিয়ে প্রিজন ভ্যানে উঠে পড়েছিলেন। এখন উনি টুইটারের বাঘ সেজে তর্জন গর্জন করছেন!’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের পরও শুভেন্দুকে ‘আলুভাতে মার্কা নেতা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল। মহিলা পুলিশকর্মীদের তাঁর গায়ে হাত দিতে নিষেধ করে শুভেন্দুর বলা ‘‘ডোন্ট টাচ মাই বডি’’ মন্তব্যটি নিয়েও ‘‘সপ্তপদী রিভিজিটেড’’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন কুণাল। বুধবারও টুইটারে শুভেন্দুকে আক্রমণ করে কুণাল লিখেছেন, ‘বিরোধী দলনেতা টুইটারে বাঘ সাজছেন আসলে কাপুরুষ।’