আগে থেকে অনুমতি চেয়ে রাখা সত্ত্বেও হলদিয়ার পুরভোটে প্রচার করতে পারলেন না সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। প্রচারের শেষ দিনে আজ, শুক্রবার বাতিল করতে হল বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর প্রচার কর্মসূচিও। এই অবস্থায় তিন মাস আগে সমতলের চারটি পুরসভার মতো এ বারের ৭টি পুরসভার ভোটেও তাণ্ডবের আশঙ্কা করছে বিরোধীরা।
বিজেপি ১৩ অগস্টের পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে। হলদিয়ায় বৃহস্পতিবার প্রচার মিছিলে অংশ নিতে গিয়ে তৃণমূলের হুমকির জেরে পুলিশের বাধায় তা স্থগিত করতে হয়েছে সিপিএম রাজ্য সম্পাদককে। তার পরে বামফ্রন্ট নেতারা দফতরে গিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার এ কে সিংহের দেখা পাননি। সচিবের কাছে তাঁদের দাবি, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হোক।
বামেদের অভিযোগ, হলদিয়া ও পাঁশকুড়া পুরসভার বেশির ভাগ ওয়ার্ডে বিরোধীদের প্রচারের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। মিছিলের কথা জানালেই প্রশাসন জানাচ্ছে, তৃণমূল সেখানে আগে থেকে কর্মসূচি নিয়ে রেখেছে! সূর্যবাবুর এ দিনের প্রচারের জন্য জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে পর্যন্ত জানানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও সূর্যবাবুরা মিছিল শুরুর সময়েই তৃণমূলের কিছু লোক উল্টো দিকে জড়ো হয়ে মাইকে স্লোগান ও হুমকি দিচ্ছিল বলে বামেদের অভিযোগ। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার ও চেষ্টাই করেনি বলে তাঁদের দাবি। ঘটনার পরে কলকাতায় কমিশনের দফতরে যান বাম নেতারা। পরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব বলেন, ‘‘হলদিয়া পুরসভায় প্রশাসক মহকুমা শাসক এবং তিনিই এখন রিটার্নিং অফিসার। প্রশাসক পর্ষদের সদস্য তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। কোথাওই বিরোধীদের প্রচার করতে দেওয়া হচ্ছে না। পাঁশকুড়ায়ও একই অবস্থা।’’ কমিশন দফতরে এ দিন অবশ্য তাঁদের বলা হয়, কমিশনার উত্তরবঙ্গের দুই পুরসভার ভোট-পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গিয়েছেন। ফেরার কথা আজ বিকালে। তত ক্ষণে প্রচার শেষ!
দুর্গাপুরে সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে মামলা পর্যন্ত করতে হয়েছে। ওই পুরসভার সব বুথে সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে প্রস্তুতি নিতে কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। যার প্রেক্ষিতে বামেদের সুরেই প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘পছন্দের প্রার্থীকে অবাধে ভোট দেওয়া নাগরিকদের অধিকার। নখদন্তহীন কমিশন অধিকার রক্ষা করতে না পারলে মানুষকেই প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে।’’