—ফাইল চিত্র
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় অভিযোগ উঠেছে বহু মানুষকে ঘর ছাড়তে হওয়ার। সেই প্রসঙ্গে আজ, মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট।
রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসন পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসায় গুন্ডাদের মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। মামলাকারীদের অভিযোগ, এই হিংসায় ১৮ জন রাজনৈতিক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। মহিলাদের উপরে যৌন নির্যাতন হচ্ছে। বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়ে রাজ্যের মধ্যেই অন্যত্র বা রাজ্যের বাইরে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি মামলাকারীদের আর্জি, কেন্দ্রকে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হোক। রাজনৈতিক হিংসায় প্রশাসন জড়িত কি না, তা দেখতে গঠন হোক সিট-ও।
আজ মামলাকারীদের আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দের অনুরোধে সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, জাতীয় মহিলা কমিশন, মহিলা ও শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন ও তফসিলি জাতি-জনজাতি কমিশনকেও এই মামলায় পক্ষ করে তাদের বক্তব্য জানতে চেয়েছে। আনন্দের যুক্তি, এই সংস্থাগুলি পীড়িতদের অভিযোগ পেয়ে পদক্ষেপ করেছে। বিচারপতি বিনীত সরণ ও বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের অবসরকালীন বেঞ্চ জানিয়েছে, ২ জুন এ বিষয়ে শুনানি হবে।
এ দিন জাতীয় মহিলা কমিশন রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে নোটিস পাঠিয়ে ৩১মে তাঁকে মহিলা কমিশনের সামনে হাজির হতে বলেছে। পশ্চিমবঙ্গে হিংসার ঘটনায় মহিলাদের উপরে নির্যাতনের বিষয়ে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করেছে। কমিশনের প্রতিনিধিদের বক্তব্য, তাঁরা রাজ্যে গিয়ে দেখেছেন, পুলিশ-প্রশাসন নির্যাতিতা মহিলাদের অভিযোগ পেয়েও পদক্ষেপ করছে না। পুলিশকে বারবার সতর্ক করা হলেও পুলিশ অসহযোগিতা করছে।
গত সপ্তাহে বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত দুই ব্যক্তির খুনের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। ২মে ভোটের ফল প্রকাশের পরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত কাঁকুড়গাছির অভিজিৎ সরকার ও সোনারপুরে হারান অধিকারীকে খুনের অভিযোগ ওঠে। আদালত এক সপ্তাহের মধ্যে বক্তব্য জানাতে বললেও, রাজ্য হলফনামা জমা করেনি। রাজ্যের হয়ে আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা যুক্তি দেন, এ বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে মামলা চলছে। তাই সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে শুনানি না-ও করতে পারে। লুথরা বলেন, হাই কোর্ট হিংসায় নিপীড়িতদের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাতে বলেছে। যাতে কমিশন রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে উপযুক্ত পদক্ষেপের নির্দেশ দিতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য জানিয়েছে, রাজ্যকে শীর্ষ আদালতে নিজের বক্তব্য জানাতে হবে। এ জন্য দু’সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।