শুভেন্দু অধিকারীকে দেওয়া নোটিসের অখিল গিরির পুত্রের আইনজীবী জানিয়েছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এই আক্রমণ করা হয়েছে। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
শুভেন্দু অধিকারীকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে একটি আইনি নোটিস পাঠালেন মন্ত্রী অখিল গিরির পুত্র সুপ্রকাশ গিরি। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আগেই মানহানির অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। নোটিসে শুভেন্দুকে বলা হয়েছে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চিঠির জবাব না দিলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। আড়াই পাতা দীর্ঘ সেই আইনি চিঠির ছত্রে ছত্রে রয়েছে শুভেন্দু কী বলেছেন, কেন বলেছেন আর কেন তাঁকে এই নোটিস দেওয়া হচ্ছে, তার বিশদ বিবরণ ।
গত ১৯ নভেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরে অখিলের বিধানসভা কেন্দ্র রামনগরে একটি জনসভা করেছিলেন শুভেন্দু। সেখানেই তিনি মন্ত্রী অখিল এবং তাঁর পুত্র সুপ্রকাশকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করেছিলেন বলে অভিযোগ। শুভেন্দু সে দিন যে সব মন্তব্য করেছিলেন চিঠিতে, তা ভাষান্তর-সহ উল্লেখ করেছেন সুপ্রকাশের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘সমস্ত বাংলা চ্যানেল এবং সংবাদমাধ্যমে শুভেন্দুর এই মন্তব্য সম্প্রচারিত হয়েছে। শুভেন্দু আমার মক্কেলের উদ্দেশে বলেছেন, ‘দেখতে পাচ্ছেন অখিলবাবু? আপনার পুত্র তো আপনার ঝাড়ের বাঁশ; সে আবার বড় নেতা, সে তো গ্র্যাজুয়েটও নয়, অথচ কাঁথি কলেজের সভাপতি’।’’ এই উক্তিটি প্রথমে বাংলায় লিখে পরে তার ইংরেজি অনুবাদও দেওয়া হয়েছে নোটিসে।
তবে অভিযোগ এখানেই শেষ হয়নি। অখিল-পুত্রের আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, ‘‘সুপ্রকাশের উপর হিংসে থেকেই এই মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু।’’ কেন হিংসে, তার কারণ ব্যাখ্যা করে অয়ন লেখেন, “আমার মক্কেল সাম্প্রতিক কালে রাজনৈতিক আঙিনায় আপনার থেকেও বেশি সফল হয়েছেন।’’ তাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই সুপ্রকাশকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু, বলে তাঁর বক্তব্য।
সুপ্রকাশকে নিয়ে শুভেন্দুর ‘গ্র্যাজুয়েটও নয়’ মন্তব্যের পাল্টা অখিল-পুত্রের আইনজীবী লিখেছেন, ‘‘আমার মক্কেল ২০০৩ সালে কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে ম্যানেজমেন্ট নিয়ে স্নাতকোত্তর। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করতেন। তাঁকে এ ভাবে আক্রমণ করে আসলে কুরুচিকর মনোভাবের পরিচয় দিয়েছেন শুভেন্দু।’’
এ ছাড়াও সুপ্রকাশের বিরুদ্ধে শুভেন্দু অজস্র মিথ্যা এবং অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘‘ওই সমস্ত কথা পরিচিত মহলে আমার মক্কেলের সম্মানহানি করেছে।’’ তাই অবিলম্বে শুভেন্দুকে বলা হয়েছে, ‘‘যা বলেছেন, তার প্রমাণ দাখিল করুন।’’ ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘প্রমাণ দিতে না পারলে ধরে নেওয়া হবে, ইচ্ছাকৃত ভাবে মিথ্যে অভিযোগ এনে সুপ্রকাশের সম্মানহানি করার চেষ্টা করেছেন শুভেন্দু।’’
মঙ্গলবার এই নোটিসের খবর প্রকাশ্যে এলেও নোটিসের তারিখ বলছে সোমবার অর্থাৎ ২১ নভেম্বর জারি করা হয়েছিল সেটি। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। এর পর বৃহস্পতিবারের মধ্যে নোটিসের জবাব না দিলে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।