সুনীল মণ্ডল। —ফাইল চিত্র।
ভোটের পর বিজেপি-র নীতি-নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। এ বার পদ্মশিবিরে যোগ দেওয়ার কথাই বেমালুম অস্বীকার করলেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল। দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁ সংসদ পদ খারিজে যখন সক্রিয় হয়েছে তৃণমূল, ঠিক সেই সময়ই সুনীল দাবি করলেন, বিজেপি-তে কখনও যোগই দেননি তিনি। আগেও তৃণমূলে ছিলেন।, এখনও আছেন, আগামী দিনেও থাকবেন।
বেশ কিছু দিন ধরেই তৃণমূল নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন সুনীল। বাংলায় বিজেপি-র পরাজয় ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। প্রস্তাব পেলে তৃণমূলে ফিরতে রাজি, এমন মন্তব্যও করেন। তৃণমূল সাংসদ সৌগত বন্দ্যোপাধ্যায় যদিও তাঁকে ফেরত নেওয়ার সম্ভাবনা খারিজ করে দেন। সরাসরি সুনীলকে ‘ধান্দাবাজ’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
এর পর বিষয়টি সাময়িক থিতিয়ে গেলেও, গত বৃহস্পতিবার দিল্লিতে মুকুল রায়ের বাড়িতে দেখা যায় তাঁকে। সেই নিয়ে জল্পনার মধ্যেই সোমবার সংসদে তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে একযোগে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন সুনীল। ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে কেন্দ্রকে জবাব দিতে হবে বলে সকলের সঙ্গে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভও দেখান। তা নিয়ে প্রশ্ন করলে সংবাদমাধ্যমে সুনীল বলেন, ‘‘আমি তো তৃণমূলেই আছি! কখনও পদত্যাগই করিনি। আমি তৃণমূলে ছিলাম, আছি এবং আগামী দিনেও থাকব। তৃণমূলের সকলের সঙ্গে কাজ করছি। পেগাসাস নিয়েও প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমাদের নেত্রী তো দীর্ঘ দিন ধরেই এর বিরুদ্ধে সরব। এ ভাবে ফোনে আড়ি পাতার অর্থ ব্যক্তিগত সত্ত্বায় আঘাত হানা। কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত কথা বলব, সুখ-দুঃখের ভাগ করে নেব, সেখানে নজরদারি চালানো চরম অন্যায় কাজ।’’
তবে সুনীল বিস্মৃত হলেও, ভোটের আগে গত বছর ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় প্রকাশ্যে বিজেপি-তে যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল সুনীল মণ্ডলকে। ওই একই দিনে পদ্মপতাকা হাতে তুলে নেন শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিভিন্ন দলের তৎকালীন ১১ জন বিধায়ক। তার পর কাটোয়ায় বিজেপি প্রার্থীর হয়ে প্রচারে গিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতাকে তিনি খুনের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ ওঠে। সে সব কি ভুলে গিয়েছেন তিনি? জবাবে সুনীল বলেন, ‘‘কারও সঙ্গে দেখা করা যায় না কি? উনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দেখা করতে যেতেই পারি।’’
তাহলে তৃণমূলের তরফেই বা তাঁর সদস্যপদ খারিজের আর্জি জানানো হল কেন? সুনীলের যুক্তি, ‘‘পুরোটাই ভুল বোঝাবুঝি। সুদীপদা জানেত চেয়েছিলেন, আমি কোথায় আছি। একটু মান-অভিমান হয়েছিল। ওসব আর নেই। জানিয়ে দিয়েছি, তৃণমূলেই আছি এবং থাকব।’’