নতুন বছরের শুরুতেই মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও) সুনীলকুমার গুপ্ত রাজ্য প্রশাসনে ফিরছেন। তবে তাঁর জায়গায় এখনই কোনও অফিসারকে পাঠাচ্ছে না নবান্ন। ঠিক হয়েছে, যুগ্ম মুখ্য নির্বাচনী অফিসারকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন সুনীলবাবু।
নবান্নের খবর, বারবার বলার পরেও সুনীলবাবুকে রাজ্য স্তরে ফিরিয়ে দিতে চাইছিল না নির্বাচন কমিশন। অথচ মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা, সুনীলবাবু রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিন। ঘনিষ্ঠ মহলে মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন, ২০১৬-র বিধানসভা ভোট ছিল তাঁর জীবনে সবচেয়ে কঠিন নির্বাচন। তখন যে ক’জন অফিসারের ভূমিকা তাঁর সদর্থক মনে হয়েছে, সুনীলকুমার তাঁদের অন্যতম। কমিশনের নানা সিদ্ধান্ত যে পুরোপুরি আইনমাফিক হচ্ছে না, সে সময় সুনীলবাবু তা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন। বিশেষ করে জেলা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারির প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। এক ভিডিও কনফারেন্সে কমিশনের এই ফরমানকে চ্যালেঞ্জ করে সিইও বলেছিলেন, এমন নির্দেশ তিনি জারি করতে পারবেন না।
দ্বিতীয় দফায় সরকার গড়ার পর থেকেই তাই মুখ্যমন্ত্রী সুনীলবাবুকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাতে চেয়েছেন। তার জন্য প্রয়োজনে কমিশনের সঙ্গে ঝগড়া করতেও পিছপা নন তিনি। নবান্নের খবর, জানুয়ারিতে রাজ্যের বিভিন্ন দফতরে পুনর্গঠন হতে পারে। মমতা তখনই সুনীলবাবুকে ফেরত চান। মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা পেয়ে গত সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন রাজ্যকে জানায়, সিইও-কে রাজ্যে ফেরত পাঠাতে তাদের আপত্তি নেই। তবে নবান্ন যেন দ্রুত কোনও অফিসারকে কমিশনে পাঠায়।
এর আগে নতুন সিইও হিসেবে আরিজ আবতাফ, বরুণ রায় এবং এ সুব্বাইয়ার নাম কমিশনের কাছে প্রস্তাব করেছিল রাজ্য। কিন্তু কমিশন নতুন তালিকা চায়, যা এখনও পাঠানো হয়নি। কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতর আরও একটি প্যানেল কমিশনে পাঠাবে। যদিও সেই প্যানেল এখনও মুখ্যমন্ত্রী অনুমোদন করেননি।
আপাতত রাজ্যে কোনও ভোট নেই। তাই ঠিক হয়েছে, যুগ্ম সিইও-কে দায়িত্ব বুঝিয়ে সুনীলবাবু রাজ্য স্তরে ফিরবেন। এখন রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। সেটা চলবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। ওই কাজ শেষ হলে সুনীলবাবুর নবান্নে ফিরতে আর বাধা থাকবে না।