সুন্দরবনে এটি মডেল কর্মক্ষেত্র হিসেবে তৈরি হতে চলেছে৷ নিজস্ব চিত্র।
মাছ-কাঁকড়া-মধুর খোঁজে প্রতিনিয়তই গভীর জঙ্গলে পাড়ি দেন সুন্দরবনের মৎস্যজীবী ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। জঙ্গলে গিয়ে কখনও কখনও বাঘের হামলার মুখেও পড়তে হয় তাঁদের। সেই কথা মাথায় রেখেই নতুন উদ্যোগ নিল স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি ও বন দফতর। জি-প্লটের সত্যদাসপুর সবুজবাজারের কাছে জগদ্দল নদীর পাড়ে প্রায় ৩৫ বিঘা জায়গার উপর ‘মডেল কর্মক্ষেত্র’ ও ‘ইকো পর্যটন কেন্দ্র’ তৈরির পরিকল্পনা নিল বন দফতর এবং পঞ্চায়েত সমিতি। সুন্দরবনের আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য বিকল্প কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করতেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন দফতর। ফলে আদিবাসী ও প্রান্তিক মানুষজনের আর জঙ্গলে যেতে হবে না। প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কাও কমবে অনেকটাই।
পাথরপ্রতিমার সত্যদাসপুর, দাসপুর ও পশ্চিম দ্বারিকাপুর এলাকায় কয়েকশো আদিবাসী পরিবার রয়েছে। তাঁদের রোজগারের মূল ভিত্তি সুন্দরবনের জঙ্গলকে ঘিরেই। মাছ ধরতে গিয়ে এক বছরের মধ্যে তিন মৎস্যজীবী বাঘের হামলার মুখে পড়ে জখম হয়েছেন৷ তাই স্থানীয় সত্যদাসপুরে জগদ্দল নদীর পাড়ে নির্ধারিত জায়গায় মাছ, কাঁকড়া ও চিংড়ি চাষের ব্যবস্থা করা হবে বলেই জানানো হয়েছে। পাশাপাশি মৌমাছি প্রতিপালন এবং পোলট্রি ফার্মও তৈরি করা হবে এই কেন্দ্রে।
এই কর্মক্ষেত্র চালু হলে প্রায় হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলেও আশাবাদী পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতি। তবে রাজ্য সরকারের তরফে পরিবেশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্র মিললে তবেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলেই জানা গিয়েছে। শুক্রবার সেই জায়গা সরেজমিনে ঘুরে দেখেন পাথরপ্রতিমার বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সমীর জানা, জেলার বিভাগীয় বনাধিকারিক মিলন মণ্ডল, নোডাল অফিসার সৌরভ দাস-সহ ব্লক ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধিরা। সমীর জানা বলেন, ‘‘জঙ্গলের বিকল্প কর্মক্ষেত্র হিসেবে ইকো পার্কটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য চালু করা হবে। এটি সুন্দরবনে মডেল কর্মক্ষেত্র হিসেবে তৈরি হতে চলেছে৷ পর্যটকদের কাছেও এটি দর্শনীয় হয়ে উঠবে।’’