আসছে বছর পুজোর আগেই নতুন জেলা সুন্দরবন, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

আগামী আট থেকে দশ মাসের মধ্যে পুজোর আগেই সুন্দরবন জেলার উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সন্দেশখালিতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে এসে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বনন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৫ ২০:০৯
Share:

আগামী আট থেকে দশ মাসের মধ্যে পুজোর আগেই সুন্দরবন জেলার উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সন্দেশখালিতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে এসে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বনন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু সুন্দরবন নয়, উন্নয়নের জন্য বসিরহাটকেও আলাদা জেলার মর্যাদা দেওয়া হবে। বর্ধমানকে গ্রামীণ ও শিল্প এই দু’টি ভাগে ভাগ করা হবে। তার সঙ্গে ঝাড়গ্রামকেও জেলা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। বর্ধমান ও ঝাড়গ্রামের কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হবে।

Advertisement

তবে ২০১৩ সালে বসিরহাটকে জেলা করবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে জেলার কাজ এখনও শেষ হয়নি। তবে বসিরহাটকে স্বাস্থ্য জেলা ঘোষণা করে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালকে মুখ্যমন্ত্রী জেলা হাসপাতালের মর্যাদা দিয়েছেন। এখন ওই হাসপাতালেই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে তোলা হচ্ছে।

এ দিন তিনি জানান, একটি জেলা করতে গেলে প্রশাসনিক কিছু নিয়ম কানুন দরকার সেগুলি মিটলেই সুন্দরবন জেলায় পরিণত হবে। বারাসতে সরকারি দফতর তৈরি হওয়ায় মানুষ অনায়াসে সেখানে গিয়ে নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে পারেন। কিন্তু সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা যেমন গোসাবা, নামখানা, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি থেকে সবসময় মানুষের পক্ষে বারাসত বা আলিপুরে সরকারি দফতরে যাওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া তা ব্যয় সাপেক্ষও বটে। তাই সুন্দরবন যদি জেলা হয়। তা হলে এখানকার মানুষ অনায়াসেই সরকারি দফতরে নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন। আর আধিকারিকরা তা দ্রুত সমাধান করবেন। তা ছাড়া গত ৩৪ বছরে বামেরা এই জায়গাটির কোনও উন্নয়ন করেনি। অথচ এখানে উন্নয়নের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। জেলা হলেই এখানে উন্নয়ন আরও বেশি হবে।

Advertisement

রাজ্যে এই সরকার প্রচুর উন্নয়ন করেছে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। যেমন ইতিমধ্যে রাজ্যের ন’কোটি মানুষের মধ্যে তিন কোটি মানুষকে ২ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হয়েছে। আরও ৩ কোটি মানুষকে তিন টাকা কেজি দরে চাল দেওয়া হবে। যাঁরা সাদা ফর্ম পূরণ করেছেন তাঁদের মধ্যে ১ কোটি মানুষকে চাল দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এই তিনটি ব্যবস্থা না করলে মানুষের উন্নয়ন হয় না। আর আমরা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রকল্পে ৮৮ শতাংশ পরিষেবা দিতে পেরেছি।’’ তৃণমূল সরকার ৪৬ হাজার গ্রামীণ শিল্পকে টাকা দিচ্ছে। সংখ্যালঘুদের জন্য হোস্টেল, কবরস্থান, ২৭ লক্ষ কন্যাশ্রী দেওয়া-সহ বিভিন্ন সুবিধার ব্যবস্থা করেছে। শুধু তাই নয় এখন মৎস্যজীবীদের মাঝসমুদ্রে গিয়ে বিপদ ঘটলে যন্ত্রের সাহায্যে আমরা বুঝতে পারি। আর এটি শুধু এই সরকারই করতে পেরেছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি।

তিনি বলেন, ‘‘বাম আমলের ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে এই সরকারকে কাজ করতে হচ্ছে। তৃণমূল সরকার ৪০ হাজার কোটি টাকা আয় বাড়িয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। তার মধ্যে ২৮ হাজার কোটি টাকা প্রত্যেক মাসে ঋণ শোধ করতে হয়। এরপর সরকারি কর্মীদের বেতনের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা দিতে হয়। বাকি ২০০০ কোটি টাকায় রাজ্যের উন্নয়ন হয়। এই টাকায় কী উন্নয়ন সম্ভব? কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা সবুজ সাথী প্রকল্প শুরু করেছি। সেতু নির্মাণ করছি। প্রচুর রাস্তা তৈরি করছি।’’ সাইকেল বিতরণ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি চাই সাইকেল করে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা শিখুক। এরাই একদিন বিশ্ব কাঁপাবে, বাংলার মুখ রক্ষা করবে। তাই এত ঋণের মধ্যেও আমরা সবুজ সাথী প্রকল্প শুরু করেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement