মোকার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। —প্রতীকী চিত্র।
ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা পেয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে সুন্দরবনে স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটন ব্যবসায়ীদের। ঘূর্ণিঝড় আমপান, ইয়াসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অংশ। এখন মোকার পূর্বাভাসে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তাঁরা। ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে নিজেদের লঞ্চ, ভুটভুটিকে নোঙর করেছেন। ঝড়ে যাতে এই সব জলযানের ক্ষতি না হয়, তার জন্য আগেভাগেই মাতলা নদীর তীরে সেগুলিকে নোঙর করা হয়েছে। বাঁধা হয়েছে শক্ত করে। রবিবার দুপুরেই ঘূর্ণিঝড় মোকার আছড়ে পড়ার কথা। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তার বড় কোনও প্রভাবের আশঙ্কা না থাকলেও জরুরিকালীন প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে স্থানীয় প্রশাসনও। ট্রলার নিয়ে ফিরে আসছেন মৎস্যজীবীরা।
মোকার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সতর্কতা জারি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘাতেও। সকাল থেকে দিঘার সমুদ্র উত্তাল। রবি এবং সোমবার সেখানে সমুদ্রস্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। প্রশাসনের ঘোষণা, ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাবে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। মোকার প্রভাবে সমুদ্র উপকূলে বাতাসের গতিবেগও বাড়তে পারে। তাই দু’দিন সমুদ্র থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
যদিও স্কুলে গরমের ছুটির জন্য দিঘার হোটেলগুলিতে প্রচুর পর্যটক রয়েছেন। তার পর সপ্তাহান্তে এই ভিড় আরও বেশি হচ্ছে। অনেকেই শনি এবং রবিবার ছুটির দিন দেখে আগেভাগে দিঘা পৌঁছে গিয়েছিলেন। এখন প্রশাসনের এমন নিষেধাজ্ঞায় কিছুটা নিরাশ তাঁরা। ওই পর্যটকদের কেউ কেউ বলছেন ঘূর্ণিঝড় মোকার জন্য যে এমন নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে, তা না জেনেই তাঁরা চলে এসেছেন। তাই ব্যাগপত্র গুছিয়ে অনেকে আবার বাড়িও ফিরছেন।
আবহাওয়া দফতর রবিবার সকালে জানিয়েছে, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোকা বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মায়ানমার পেরিয়েছে। ইতিমধ্যে তার প্রভাব পড়তে শুরু হয়েছে কয়েকটি জায়গায়। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা অবস্থান করছিল সকালে। আপাতত কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম করছে। রবিবার বিকেল নাগাদ মায়ানমারে সিটুয় হয়ে কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে।