উলুবেড়িয়া লোকসভা এবং নোয়াপাড়া বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে চেনা বৃত্তেই থাকল তৃণমূল।
সদ্য অনুষ্ঠিত সবং বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল সেখানকার প্রাক্তন বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার স্ত্রী গীতারানিকে। একই ভাবে উলুবেড়িয়ায় প্রয়াত দলীয় সাংসদ সুলতান আহমেদের স্ত্রী সাজদা আহমেদকে প্রার্থী করা হচ্ছে বলে শুক্রবার ঘোষণা করলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নোয়াপাড়ায় তৃণমূলের প্রার্থী গারুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল সিংহ।
আগামী ২৯ জানুয়ারি এই দুই কেন্দ্রে ভোট। দু’কেন্দ্রের প্রার্থীদের পরিচিতি প্রসঙ্গে পার্থবাবু বলেন, ‘‘প্রয়াত সুলতানের স্ত্রী উলুবেড়িয়ারই ভোটার। উনি স্থানীয় এলাকার মানুষের কাছে অনেক দিন ধরেই পরিচিত। আর সুনীল দক্ষ সংগঠক। গারুলিয়া পুরসভায় ওঁর কাজ খুবই প্রশংসিত।’’
গারুলিয়া পুরসভা নোয়াপাড়া বিধানসভার অন্তর্গত। প্রসঙ্গত, গারুলিয়ার চেয়ারম্যান সুনীল ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহের আত্মীয়। মুকুল রায় তৃণমূল ছাড়ার পরে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে শাসক দলের এখন একচ্ছত্র নেতা অর্জুনই। তাঁর উপরেই সংগঠনের ভার ছেড়়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এমনকী, অর্জুনকে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে হিন্দি বলয়ে সংগঠন বাড়ানোর দায়িত্বও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা এক সময়ে মুকুলের দায়িত্ব ছিল। নোয়াপাড়ায় সুনীলকে প্রার্থী করে তৃণমূল উপনির্বাচনের সাংগঠনিক নিয়ন্ত্রণ অর্জুনের হাতেই তুলে দিল। গত বছর বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিদায়ী বিধায়ক ম়ঞ্জু বসুকে হারিয়েছিলেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মধুসূদন ঘোষ। উপনির্বাচনে ম়ঞ্জুকে আর টিকিট না দিয়ে সুনীলকে নিয়ে আসা অর্জুনের হাতে রাশ রাখার জন্যই, ব্যাখ্যা মিলছে তৃণমূল সূত্রে।
দুই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে চেনা মুখ বেছে নিয়েছে বামফ্রন্টও। উলুবেড়িয়ায় সিপিএম প্রার্থী হচ্ছেন যুব নেতা সাবিরউদ্দিন মোল্লা এবং নোয়াপাড়ায় দলের রাজ্য কমিটির সদস্য গার্গী চট্টোপাধ্যায়। সাবিরউদ্দিন গত লোকসভা নির্বাচনেও উলুবেড়িয়ায় প্রার্থী ছিলেন। আর গার্গী গত বিধানসভা ভোটে নৈহাটি কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছিলেন। সবংয়ে জোট-প্রস্তাব না মানায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। এখন কংগ্রেসের সঙ্গে প্রার্থী প্রসঙ্গে কোনও আলোচনা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নে এ দিন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘‘এর আগে যা যা উপনির্বাচন হয়েছে, সেখানে বামফ্রন্ট নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে। এ বার নতুন কিছু হওয়ার ছিল না। কেউ ক্ষুব্ধ হলে কিছু করার নেই!’’
উপনির্বাচনে বিজেপি এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। আর এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক প্রদেশ কংগ্রেসের কাছে প্রস্তাবিত নাম চেয়েছেন। তবে মেরুকরণের কেন্দ্রে থাকা উলুবেড়িয়ায় ভাঙা সংগঠন নিয়ে প্রার্থী দেওয়া উচিত হবে কি না, তা নিয়ে দোলাচল আছে রাজ্য কংগ্রেসের অন্দরে। দখলে থাকা আসন হিসাবে নোয়াপাড়ায় তারা অবশ্য লড়তে চায়।