Subramanian Swamy

গোর্খাল্যান্ড উস্কে টুইট বার্তা স্বামীর, আলোড়ন

এনআরসি, সিএএ-র বিরুদ্ধে পাহাড়বাসী জোটবদ্ধ হতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় নতুন করে ফের গোর্খাল্যান্ড নিয়ে দাবি ওঠাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:২৭
Share:

সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। —ফাইল চিত্র

দিল্লিতে হারের দিনই কেন্দ্রের শাসক বিজেপি’র রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর একটি টুইট বার্তাকে ঘিরে আলোড়ন পড়েছে দার্জিলিং জেলা জুড়ে। তিনি টুইট করেছেন, ‘২০১৪ সালে দলের লোকসভা ভোটের প্রতিশ্রুতিগুলি দলীয় স্তরে খতিয়ে দেখা শুরু করা উচিত। কারণ, এর অধিকাংশ প্রতিশ্রুতি আমরা রাখিনি। এর মধ্যে গোর্খাল্যান্ডকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। সেখানে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করাটা জরুরি।’ বিজেপির মধ্যে থেকেই এই দাবিকে আরও জোরালো করেছেন দলের দার্জিলিঙের বিধায়ক নীরজ জিম্বাও। তিনিও অবিলম্বে এই প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবি তুলেছেন।

Advertisement

চলতি বছরের জেলায় পুর এবং পঞ্চায়েত ভোট রয়েছে। পাহাড়ের জিটিএ এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। এনআরসি, সিএএ-র বিরুদ্ধে পাহাড়বাসী জোটবদ্ধ হতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় নতুন করে ফের গোর্খাল্যান্ড নিয়ে দাবি ওঠাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে সমতলের বিজেপি নেতৃত্ব মুখে কুলুপ এঁটেছেন। দলের শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল বলেন, ‘‘এটা কেন্দ্র এবং রাজ্য নেতৃত্বের বিষয়। আমি কিছু বলতে পারব না।’’ দলের জেলার কয়েক জন নেতা বলেছেন, ‘‘রাজ্য ভাগের বিষয় জেলায় উঠলেই সমতলে ভোটে এর প্রভাব পড়বে। এটা তো অনেকটা তৃণমূলের হাতে মোয়া তুলে দেওয়ার মতো।’’

তৃণমূল যে বিষয়টিকে ছাড়বে না, তা রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী তথা দলের উত্তরের কোর কমিটির চেয়ারম্যানের গৌতম দেবের কথায় স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, ‘‘রাজ্য ভাগ তো দূরের কথা। বাংলার মাটি টুকরো করার ষড়যন্ত্রকারীদের মানুষ শিক্ষা দেবে। আর বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি যে মুখ থুবড়ে পড়েছে, তা দিল্লি, ঝাড়খণ্ড ভোটেই স্পষ্ট।’’ তিনি জানান, আলাদা রাজ্যের বদলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মানেও তো তা পাহাড়কে বাংলা থেকে আলাদা করা। তৃণমূল সর্বশক্তি দিয়ে তা রুখবে।’’

Advertisement

সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ সমন পাঠক বলছেন, ‘‘সিএএ, এনআরসি নিয়ে পাহাড়ের মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে। তা বুঝতে পেরেই পুরনো বিড়াল বিজেপি ঝুলি থেকে বার করছে।’’ তিনি জানান, বিজেপি দার্জিলিং থেকে তিন বার জিতেছে, দু’বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে। তা-ও কিছু করেনি। এতে বোঝা যায়, ওদের সদিচ্ছা নেই।

সিএএ, এনআরসি-র বিরোধিতা ছাড়াও পাহাড়ে জিটিএ ভোট বা পঞ্চায়েত ভোটের আলোচনা শুরু হতেই পাহাড়বাসীর আবেগের দাবিকে সামনে আনা হচ্ছে বলে বিনয়পন্থী মোর্চা নেতারা পাল্টা দাবি করেছেন। তাঁরা জানান, গত তিনটি লোকসভা, বিধানসভা ভোটে রাজ্যভাগের দাবিকে সামনে রেখেই জিতেছে বিজেপি। ভোট গেলে সব ভুলে গিয়েছে। মোর্চার এক প্রবীণ নেতা জানান, সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বা নীরজ জিম্বা শুধু নন, কিছু দিন ধরে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তাও পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবি জানাচ্ছেন।

এ সব থেকে মনে হচ্ছে, বিজেপি নেতৃত্ব পাহাড় নিয়ে নতুন করে ফের কোনও কৌশল নিচ্ছে। তবে পাহাড়কে আবার অশান্ত করার চেষ্টা হলে মানুষ তা রুখবে। মোর্চার স্থানীয় নেতারা নানা কথা বললেও দলের সভাপতি বিনয় তামাং এখনই কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। হোয়াটঅ্যাপেও তিনি জবাব দেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement