TET Exams

আগে নিয়োগ চাই, সরব প্রথম টেটের প্রার্থীরা

উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের প্রথম পরীক্ষায় যাঁরা পাশ করেন, সেই শিক্ষকপদ প্রার্থীদের অভিযোগ, উত্তীর্ণ হয়েও দীর্ঘ প্রায় ন’বছর ধরে তাঁরা বঞ্চনার শিকার।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:৫৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেয়েই উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ-বিড়ম্বনা কাটছে না রাজ্য সরকারের। উচ্চ আদালত যে-সব প্রার্থীর মেধা-তালিকা নতুন ভাবে তৈরি করে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে, তাঁরা টেট দিয়েছেন ২০১৫ সালে। তারও বছর তিনেক আগে, ২০১২ সালে যাঁরা উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের প্রথম পরীক্ষা দেন, সেই প্রার্থীদের দাবি, তাঁরা পাশ করেছেন আগে। তাই স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে তাঁদেরই। অন্য একটি মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ওই প্রার্থীদের সেই পরীক্ষাই প্রথম টেট হিসেবে গণ্য।

Advertisement

উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের প্রথম পরীক্ষায় যাঁরা পাশ করেন, সেই শিক্ষকপদ প্রার্থীদের অভিযোগ, উত্তীর্ণ হয়েও দীর্ঘ প্রায় ন’বছর ধরে তাঁরা বঞ্চনার শিকার। এ বার নতুন প্যানেল তৈরি করে নিয়োগের ক্ষেত্রে আগে তাঁরা সুযোগ না-পেলে তাঁদের আবার বঞ্চনার শিকার হতে হবে।

রাজ্য সরকার ২০১২ সালের টেট-কে প্রথমে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগের পরীক্ষা হিসেবে প্রথমে মান্যতা দেয়নি। স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি তখন জানিয়েছিল, ওটা উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রাথমিক বাছাই মাত্র। কিন্তু পরবর্তী কালে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা হাইকোর্টে মামলা করেন। উচ্চ আদালত সেই পরীক্ষাকে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (টেট) হিসেবে মান্যতা দেয়। একই সঙ্গে আদালত জানায়, ২০১২ সালের পরীক্ষাকে টেট বলেই গণ্য করতে হবে। পরে তাতে পাশ করা প্রার্থীদের টেট-উত্তীর্ণের সার্টিফিকেটও দেয় রাজ্য সরকার।

Advertisement

২০১২ সালে টেট পাশ কয়েকশো প্রার্থীর একাংশের অভিযোগ, ২০১৫ সালে দেওয়া সেই সার্টিফিকেটের মেয়াদ ছিল তিন বছর। ওই তিন বছরের মধ্যেই তাঁদের ইন্টারভিউ নিয়ে স্কুলে নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা। কিন্তু তাঁদের ইন্টারভিউ না-নিয়ে ২০১৫ সালে এসএসসি আরও একটি টেট নেয়। ফলে তাঁরা ২০১২-য় টেট পাশ করেও ২০১৫-র টেট পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পড়ে যান। তাঁদের একাংশ ২০১৫-য় ফের পরীক্ষা দেন। যাঁরা ফের পরীক্ষা দেননি, সেই প্রার্থীদের প্রশ্ন, তাঁদের পৃথক ইন্টারভিউ না-নিয়ে ২০১৫-র টেট পাশ করা প্রার্থীদের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হল কেন? এই নিয়ে তাঁরা এসএসসি অফিসে বেশ কয়েক বার চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।

২০১২-য় টেট পাশ করা প্রার্থীদের বক্তব্য, ২০১৫ সালে টেট পাশ করা প্রার্থীদের সঙ্গে তাঁদের মিশিয়ে দেওয়ায় তাঁরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন। কারণ, তাঁরা যে-হেতু বেশ আগে পাশ করেছেন, তাই তাঁদের ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ সদ্য পাশ করা প্রার্থীদের থেকে কম। ‘‘আমরা যখন মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করি, তখন পরীক্ষায় এখনকার প্রার্থীদের মতো এত বেশি নম্বর উঠত না। তখন প্রশ্নের ধরন এবং নম্বর দেওয়ার পদ্ধতি আলাদা ছিল। ফলে চাকরির ক্ষেত্রে আমাদের অ্যাকাডেমিক স্কোর কমে যাওয়ায় আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি,’’ বলেন এক ভুক্তভোগী প্রার্থী। তাঁদের দাবি, উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১২ সালে টেট পাশ করা প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হোক।

‘‘কোন প্রার্থী কোন বছর পাশ করেছেন, সেটা বিবেচ্য হতে পারে না। কোনও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এ ভাবে নিয়োগ হয় না,’’ বলেন এসএসসি-র এক কর্তা।

এ দিকে, উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষকপদ প্রার্থীরা জানাচ্ছেন, দ্রুত নিয়োগের দাবিতে ১৭ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার কলকাতায় মিছিল করবেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement