জ্যোতিকা বারুই
কন্যাশ্রীর মতো সুযোগ যে দিন পেয়েছিলাম ভাল লেগেছিল। আমার অভাব মিটেছিল। পড়াশোনায় উৎসাহ পেয়েছিলাম।
কিন্তু আজ যখন পুলিশের লাঠির আঘাত খেলাম, কিছুতেই কিছু মেনে নিতে পারছি না। নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে, চোখের সামনে আমাদের স্কুলে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি দেখলাম তাতে এই কন্যাশ্রীর সুবিধা নিয়ে আমরা কী করব? মুখ্যমন্ত্রী মেয়েদের কথা বলেন। অথচ তাঁর পুলিশের লাঠির আঘাত খেতে হল আমাকে এবং আমার মতো অনেক মেয়েদের। আমাদের মতো পড়ুয়াদের সঙ্গে যে ব্যবহার পুলিশ করল, তা মেনে নিতে পারছি না। আমরা পড়াশোনার জন্য শিক্ষকের দাবিতে আন্দোলন করছি। আমরা শিক্ষা চেয়েছি। তার বদলে লাঠির আঘাত পেলাম।
পুলিশ গায়ের জোরে সব কিছু করতে গিয়েই সমস্যা তৈরি করল। এখন অন্যদের দোষারোপ করছে। ছাত্রীদের উপরে তো তারাই লাঠি দিয়ে মেরেছে। সে সবের ভিডিয়ো ফুটেজ গ্রামের অনেকের হাতের মোবাইলেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ পড়ুয়াদের উপর অত্যাচার করেছে। দাগি অপরাধীদের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করে তেমন আমাদের উপর লাঠি চালানো হল, কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হল, গুলি চালানো হল। যে পরিস্থিতি তৈরি হল, তাতে এ বার স্কুলে যাব কী ভাবে তা ভাবলেই আতঙ্ক তাড়া করছে। ওই মাঠ দিয়ে কী ভাবে স্কুলে যাব?
আমরা স্কুলেই ছিলাম। আমাদের দাবির কথা বলছিলাম। পুলিশ বেপরোয়া ভাবে গেটের তালা ভেঙে ঢোকে। মাঠের মধ্যে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাচ্ছিল। চোখের সামনে এলাকার দু’জন গুলিবিদ্ধ হল। মারা গেল। আমাদের মতো ছাত্রছাত্রীদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। এই পরিবেশ কবে ঠিক হবে জানি না।
সে দিনের কথা ভাবলেই পুলিশ লাঠি দিয়ে মারছে, বোমা, গুলি চলছে চোখের সামনে ভেসে উঠছে। রাতে ঘুমোতে পারছি না। পরিবেশ, পরিস্থিতি ঠিক না থাকলে কন্যাশ্রী হয়ে আমাদের পড়াশোনার কী আদৌ উন্নতি হবে? এখন শুনছি রাতে পুলিশ বাড়ি বাড়ি ঢুকে মারধর করছে। পরিবারের লোকেরাও আতঙ্কে রয়েছেন।