শাস্তি দেওয়া হয়েছে ছাত্রদের। নিজস্ব চিত্র
কোথাও স্কুলপড়ুয়াদের নিয়ে হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কোথাও খাওয়া-দাওয়া। বৃহস্পতিবার ছিল কচিকাঁচাদেরই দিন, শিশুদিবস। কিন্তু উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের বাণীবন কল্যাণব্রত সঙ্ঘ হাইস্কুলে কোনও উদ্যাপন তো হলই না, উল্টে অষ্টম শ্রেণির জনাপনেরো ছাত্রের জুটল চড়-থাপ্পড়। প্রায় আধ ঘণ্টা কান ধরে রোদে দাঁড় করিয়েও রাখা হল তাদের। ‘অপরাধ’— ভুল বানান লেখা!
এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের মধ্যে ওই ছাত্রেরা কান ধরে মাথা হেঁট করে দাঁড়িয়ে। তাদের চড়-থাপ্পড় মারছেন শিক্ষক। পরে এক ছাত্র বলে, ‘‘স্যর লিখতে দিয়েছিলেন। যাদের বানান ভুল হয়েছিল, তাদের ক্লাস থেকে বের করে দেন। তার পরে মারেন।’’
ঘটনার নিন্দায় মুখর হয়েছেন অভিভাবকেরা। স্কুলের শিক্ষকদের একাংশও তা মেনে নিতে পারেননি। খোঁজ নিয়ে এই শাস্তির বিষয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা শিক্ষা পরিদর্শক শান্তনু সিংহ। প্রধান শিক্ষক তপন রায় মানছেন, ‘‘মারধরে ছাত্রদের যে আঘাত লাগবে না, তা বলতে পারছি না।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ওই শিক্ষক হয়তো শিশুদিবসের তাৎপর্য জানেন না। পরে ওঁকে ডেকে বুঝিয়ে বলে দেব।’’ আর এক শিক্ষক বলেন, ‘‘আজকের দিনে এ ভাবে শাস্তি দেওয়া ঠিক হয়নি।’’ তবে, অভিযুক্ত শিক্ষক এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পরে অবশ্য তিনি ওই ছাত্রদের ক্লাসে ঢোকার অনুমতি দেন।
উলুবেড়িয়ার ওই স্কুলটিতে শিশুদিবস পালনের রেওয়াজ নেই। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ দিন পড়ুয়াদের শুধু শিশুদিবসের তাৎপর্যের কথা বোঝানো হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার তা হয়নি বলে পড়ুয়াদের দাবি। উল্টে মারধরের ঘটনায় অবাক অভিভাবকেরা। তাঁরা সন্তানদের উপরে আঘাত সহ্য করতে পারছেন না। এক অভিভাবক বলেন, ‘‘স্কুলে শিশুদিবস পালন হল না। এ দিন পড়ুয়াদের শিশুদিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা না করে বানান ভুলের মতো সামান্য কারণে ওই শাস্তি মেনে নিতে পারছি না। অনেক ভাবে শাসন করা যায় । কিন্তু মনে আঘাত দিয়ে নয়।’’