ফাইল চিত্র।
ঘেরাও আর হয়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস-বিতর্কে নতুন ইন্ধন জুগিয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংসদের (ফেটসু) আচরণ। এ দিন ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের ভার্চুয়াল বৈঠকে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে বিধি ভেঙে সেই বৈঠকের পুরোটাই ফেসবুকে ‘লাইভ’ করে দেন ফেটসু-র সদস্যেরা। যাঁরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাণ, সেই ছাত্রছাত্রীদেরই একাংশ এ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বৈঠকের গোপনীয়তা ফাঁস করে দেওয়ায় শিক্ষা শিবির বিস্মিত।
বিভাগীয় প্রধান, প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ‘স্কুলের’ অধিকর্তাদের সঙ্গে উপাচার্যের ভার্চুয়াল বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ ফেরাতে আবেদন জানানো হবে। শুধু ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, যাদবপুরে স্নাতক স্তরে কলা, বিজ্ঞান বিভাগেরও প্রচুর আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এত আসন আগে কখনও খালি থাকেনি বলেই বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। সেই সব আসন পূরণের জন্য আবার যাতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা যায়, সেই জন্য রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরে আবেদন করেছেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস।
স্মারকলিপি দিতে চেয়ে ফেটসু-র সদস্যেরা এ দিন ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের ভার্চুয়াল বৈঠকে ঢুকে পর্দা টাঙিয়ে বৈঠক দেখানোর ব্যবস্থা করেন। গোটা বৈঠক ‘ফেসবুক লাইভ’ করে দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এটা নীতিবহির্ভূত, বেআইনি। ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠকের গোপনীয়তা বজায় রাখাটাই নিয়ম।
ফেটসু-র চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদারের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় আসেন না। উপাচার্যকে পাওয়া যায় না। এক বছর ধরে ফল বেরোয় না। যা-ও বা বেরোয়, তাতে প্রচুর গরমিল। ভর্তিতেও অস্বচ্ছতা। সব অনিয়মের ফল ভোগ করতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। তাঁরা চাকরির সুযোগ খোয়াচ্ছেন। স্কলারশিপ পাচ্ছেন না। ‘‘কর্তৃপক্ষের কাছে এ-সব অভিযোগ জানাতে চাই আমরা। পৌনে তিন ঘণ্টা ধরে ডেপুটেশন দিয়েছি এবং তা লাইভ করেছি। এতে কোনও অন্যায় দেখতে পাচ্ছি না। আসল প্রসঙ্গ থেকে চোখ ঘোরাতে কর্তৃপক্ষ ফেসবুক লাইভ করার ব্যাপারটাকে বলছেন বেআইনি,’’ বলেন অরিত্র।
পরপর ঘেরাওয়ের জেরে অনেক বিভাগীয় প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন না। উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ফিনান্স অফিসারও অনুপস্থিত। বুধবার কলা বিভাগের ছাত্র সংসদ যে-ভাবে ডিন ওমপ্রকাশ মিশ্রকে ঘেরাও করেছিল, ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠকে তার নিন্দা করা হয়। নিন্দা করেছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শাখাও। ঘেরাওয়েরই জেরে ঠিক হয়েছে, ভর্তি, পরীক্ষা ও ফলপ্রকাশ সংক্রান্ত জুমস কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক হবে। কিন্তু ছাত্রদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেই বৈঠক করতে হবে। তবে উপাচার্য রাজি হননি।