প্রতীকী ছবি।
করোনার আগ্রাসনে মাঝপথে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাঠ্যক্রম কমানোর কথা প্রথমে বলেছিল আইসিএসই এবং সিবিএসই বোর্ড। তার পরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীন বিভিন্ন স্কুল থেকে যারা সামনের বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে, তাদেরও পাঠ্যক্রম কমানোর কথা বলা হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সেপ্টেম্বরের এক সপ্তাহ কেটে গেল, পাঠ্যক্রম কতটা কমবে, চূড়ান্ত পাঠ কী হবে— সেই বিষয়ে কেন অন্ধকারে রাখা হচ্ছে পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের?
রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, পাঠ্যক্রম কমানোর বিষয়ে আলোচনা শুরু হলেও এখনও তার কোনও রূপরেখা তৈরি হয়নি। আগামী বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা জানাচ্ছে, সময় যত গড়াচ্ছে, ততই তারা যেন অগাধ জলে গিয়ে পড়ছে। পাঠ্যক্রমের কোন অংশ থেকে কতটা বাদ যাবে, তার হদিস না-মেলায় ঠিক কতটা পড়তে হবে, সেটাও তাদের কাছে পরিষ্কার হচ্ছে না। কিছু পড়ুয়া জানায়, মাধ্যমিকের টেস্ট হয় নভেম্বরের মাঝামাঝি বা ডিসেম্বরের গোড়ায়। পাঠ্যক্রম সম্পর্কে অবিলম্বে সুস্পষ্ট ধারণা তৈরি না-হলে তাদের প্রস্তুতি চালাতে অসুবিধা হবে।
রাজ্য পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানান, করোনা শুরু হওয়ার আগে তিন মাস ক্লাস হয়েছে। তার পরে ক্লাস হয়েছে অনলাইনে। টিভিতে এবং ফোনে ক্লাস নেওয়ার প্রক্রিয়াও চলেছে নিয়মিত। ‘‘আমরা কোনও অধ্যায় পুরোপুরি বাদ না-দিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পাঠ্যক্রম কমানোর কথা ভাবছি। পড়ুয়ারা কোনও একটি বিষয় আদৌ না-জেনে পরের ক্লাসে উঠে যাবে— এটা যেন না-হয়। এই দিকটায় বিশেষ ভাবে নজর রাখা হচ্ছে,” বলেন অভীকবাবু।
স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঠ্যক্রম ছাঁটাই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় দফতরে যাচ্ছেন না। তিনি না-থাকায় কী ভাবে পাঠ্যক্রম কমানো হবে, সেই ব্যাপারে তাঁর মতামত পাওয়া যাচ্ছে না। তাই কাজে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে।
আগামী বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পাঠ্যক্রম কী হবে, তা দ্রুত জানানোর দাবি তুলেছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “করোনার জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় দফার সামগ্রিক মূল্যায়ন হতে পারেনি। স্কুল আপাতত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকছে। মাঝ-নভেম্বরে টেস্ট হওয়ার কথা। এই অবস্থায় আগামী বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা খুবই অসহায় হয়ে পড়েছে। পাঠ্যক্রম কতটা কী কমবে, তা দ্রুত জানানো দরকার।” শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী জানান, করোনা এবং ঘূর্ণিঝড় আমপানে গ্রাম-মফস্সলের পড়ুয়ারা বিপর্যস্ত। পাঠ্যক্রমের অনেক কিছুই স্পষ্ট নয় তাদের অধিকাংশের কাছে। বিশেষ করে আগামী বছর মাধ্যমিকে কোন বিষয়ের কোন কোন অধ্যায় থেকে প্রশ্ন আসবে, সেই ব্যাপারে পরীক্ষার্থীদের অনেকেই চিন্তিত।