ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে অনুষ্ঠানের মধ্যে তিনি ‘লুকিয়ে’ উপাচার্যের ভিডিয়ো করছিলেন। যদিও সে কথা অস্বীকার করছেন পূর্বপল্লী সিনিয়র বয়েজ় হস্টেল থেকে বহিষ্কৃত পাত্রসায়রের ছাত্র। তাঁর দাবি, অনুষ্ঠানে ভিড় ছিল। ঠেলে এগোতে পারছিলেন না। সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা দুই ছাত্রের কাঁধে মোবাইল রেখে ভিডিয়ো করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আশপাশে প্রচুর লোক ছিল। সবাই আমায় দেখেছে। লুকিয়ে কিছুই করিনি।’’
প্রজাতন্ত্র দিবসে ওই হস্টেলে পতাকা উত্তোলন করতে গিয়েছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া অনুষ্ঠানের একটি ভিডিয়ো ক্লিপে (সত্যাসত্য আনন্দবাজার যাচাই করেনি) উপাচার্যকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সংবিধান বানানো হয়েছিল ‘মাইনরিটি’ ভোট দিয়ে।’’ হইচই শুরু হয়। ঘটনার পরের দিন, সোমবার, ওই ছাত্রকে হস্টেল থেকে বহিষ্কার করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পাত্রসায়রের বাসিন্দা ওই যুবক বিশ্বভারতীর স্নাতক স্তরের ছাত্র। বাবা পেশায় খেতমজুর। তিনি বলেন, ‘‘ও বরাবর পড়াশোনায় ভাল। স্কলারশিপের টাকা দিয়ে মাস দুয়েক আগে মোবাইলটা কিনেছিল।’’ ওই পড়ুয়ার দাবি, স্মৃতি হিসাবেই সে দিন মোবাইলে ভিডিয়ো তুলেছিলেন তিনি। এক বন্ধু চাওয়ায় পুরোটাই পাঠিয়েছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়াননি। তাঁর কথায়, ‘‘নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাহানি করার কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারি না।’’
হস্টেল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক চলছে। তবে ছাত্রের বাবা বলছেন, ‘‘অজান্তে ও যদি ভুল করেও থাকে, সবাই ক্ষমা চাইছি। কিন্তু আমরা দিন আনি দিন খাই। হস্টেলে না থাকতে পারলে পড়াশোনাটাই বন্ধ হয়ে যাবে।’’
ছাত্রের মা-ও বলছেন, ‘‘ছোটবেলাতেও বাড়িতে ওর নামে কোনও নালিশ আসেনি। বিশ্বভারতীতে গিয়েও কোনও ঝুটঝামেলায় থাকত না। কী যে হল সেটাই বুঝতে পারছি না।’’
ওই ছাত্রের বিষয়ে এ দিন ফোন এবং মেসেজ করা হলেও প্রতিক্রিয়া মেলেনি বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকারের। তবে, তাঁকে হস্টেলে ফেরানো হবে কিনা, সে ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে বিশ্বভারতী সূত্রের খবর।