কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালের বিক্ষোভরত জুনিয়র ও পড়ুয়া চিকিৎসকেরা। রবিবার কল্যাণীতে। নিজস্ব চিত্র।
নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে শনিবার অবস্থান-বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালের জুনিয়র ও পড়ুয়া চিকিৎসকদের একাংশ। রবিবারও সেই বিক্ষোভ অব্যাহত থাকল। পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল রবিবার দুপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বললেও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি, এই বিক্ষোভের জেরে চিকিৎসা পরিষেবা বিঘ্নিত হয়নি। তাঁদের হুঁশিয়ারি, আগামী বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরা কল্যাণীতে এসে বৈঠক না-করলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কে বা কারা কলেজের অডিটোরিয়ামের শৌচাগারে ভাঙচুর চালায়। অডিটরিয়ামের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেয়। তার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালের জুনিয়র ও পড়ুয়া চিকিৎসকদের একাংশ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালে কোনও নিরাপত্তা নেই। দিনের পর দিন কোনও না কোনও ঘটনা ঘটেই চলেছে। চিকিৎসক থেকে পড়ুয়ারা সকলেই আতঙ্কিত। কখনও হাসপাতালে একই জায়গায় বারবার আগুন লাগছে। আবার কখনও ওয়ার্ডের মধ্যে ঢুকে রোগীর সঙ্গে আসা লোকজন কর্তব্যরত চিকিৎসকদের মারধর করছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাঁদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারকে নিরাপত্তা বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে। কারণ পরের পর ঘটনায় আশঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
এক বিক্ষোভকারী পড়ুয়া সালমান হালদার বলেন, “প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা আমাদের সমস্যার কথা শুনেছেন। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি। তাঁরা আমাদের বলেছিলেন কলকাতায় গিয়ে বৈঠক করতে। কিন্তু আমাদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের কল্যাণীতে এসে নিরাপত্তা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করতে হবে। উপাচার্য অসুস্থ। তিনি ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠকে যোগ দিন। বুধবারের মধ্যে বৈঠক করতে হবে। না-হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।”
নিরাপত্তায় গলদের বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কার্যত মেনে নিয়েছেন। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, নিরাপত্তা রক্ষীরা কোনও কাজই করছেন না। অডিটোরিয়ামের এই ঘটনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তাঁরা জানালেও ঠিক কবে এই ঘটনা ঘটেছে তা নিরাপত্তা রক্ষীরা জানেন না। হাসপাতালের সুপার অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রতিনিধি দল এসে কলেজ, হাসপাতাল, হস্টেল ঘুরে দেখে বিক্ষোভকারীদের কথা বলেছেন। আশা করি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি দল গিয়েছিলেন। বৈঠক হয়েছে। এ বার কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রদের সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠকে
বসা হবে।”