কালিয়াচক-৩ ব্লকে গঙ্গার চরে উড়ছে ড্রোন। —নিজস্ব চিত্র।
আফিম তথা পোস্ত চাষ রুখতে এ বার ড্রোন নিয়ে অভিযানে নামল মালদহ জেলা পুলিশ। কালিয়াচকের তিনটি ব্লকের বিস্তীর্ণ অংশ সহ মালদহ জেলার বিরাট এলাকায় শীতের গোড়াতেই পোস্ত চাষ শুরু হয়। ভুট্টা ক্ষেতের আড়ালে এমন ভাবে পোস্ত চাষ হয় যে এলাকায় হানা দিয়েও পুলিশের পক্ষে তা খুঁজে বার করা সম্ভব হয় না। সেই কারণেই এ বার ড্রোন নিয়ে নজরদারি শুরু হল মালদহে।
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মালদহের বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছর পোস্ত চাষ হয়। কালিয়াচক-৩ ব্লকের গোবিন্দরামপুর এবং চরবাবুপুর এলাকায় গত মরশুমে সবচেয়ে বেশি পোস্ত চাষ হয়েছিল। তাই ড্রোন অভিযান শুরু হল গঙ্গার ওই দুই চর থেকেই। মালদহের ডিএসপি (সদর) দিলীপ হাজরা এবং বৈষ্ণবনগর থানার আইসি সঞ্জয় বিশ্বাস বাহিনী নিয়ে গোবিন্দরামপুর এবং চরবাবুপুরে উপস্থিত হয়েছিলেন। কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে নেওয়া ড্রোন উড়িয়ে আকাশ থেকে গোটা এলাকার ছবি তোলা হয়েছে শনিবার। তবে এখনও কোথাও পোস্ত চাষের হদিশ মেলেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পোস্ত তথা আফিমের এই বেআইনি উৎপাদন এবং নিষিদ্ধ ব্যবসার জেরে মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপের রমরমা। কালিয়াচক-৩ ব্লকেই পোস্ত চাষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়াও কালিয়াচক-২, কালিয়াচক-১, ইংরেজবাজার ব্লকের গ্রামাঞ্চল, চাঁচল-১, চাঁচল-২, গাজল, বামনগোলা এবং হবিবপুর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় এই বেআইনি চাষ বছরের পর বছর চলছে। ভুট্টা ক্ষেতের ফাঁকে ফাঁকে পোস্ত গাছ লাগানো হয়। ফলে এলাকায় হানা দিলেও পোস্ত গাছ খুঁজে বার করা অনেক সময়ই সম্ভব হয় না। সেই কারণেই এ বার ড্রোন নিয়ে আকাশপথে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় মালদহ জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: ‘ক্রীতদাস’ ছেলেকে ছাড়াতে হন্যে বাবা
কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে ড্রোন নিয়ে যাওয়া হয়েছে মালদহে। তিন জন প্রশিক্ষিত কর্মীকেও কলকাতা থেকে মালদহে পাঠানো হয়েছে। উপর থেকে প্রতিটি এলাকার অত্যন্ত স্পষ্ট ছবি তুলছে ড্রোন, খবর জেলা পুলিশ সূত্রের।
মালদহের জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী এবং পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ কিছু দিন আগেই বৈঠক করে জেলার সবক’টি পঞ্চায়েতকে সতর্ক করেছিল। পোস্ত চাষ রুখতে কঠোর নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। বিষয়টি যে এ বার শুধু নির্দেশিকাতেই থেমে থাকবে না, শনিবার ড্রোন অভিযান শুরু করে তা স্পষ্ট করে দিয়েছে পুলিশ। কালিয়াচকের পর জেলার অন্যান্য ব্লকেও এই অভিযান চলবে।