শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
যাঁরা টাকার বিনিময়ে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে দিলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শিক্ষা বাজেট নিয়ে আলোচনায় বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সিপিএমের প্রদীপ সাহা অভিযোগ তোলেন, টাকা দিয়ে অনেকের বাড়ির সব আত্মীয়, এমনকী গাড়ির চালকও স্কুলে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। জবাব দিতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘টাকা নিয়ে চাকরির কথা অনেকে বলছেন, সে তো আমিও জানি, শুনিও। কিন্তু কেউ তো সামনে এসে নির্দিষ্ট করে বলেন না, কোন লোকটা এই কাজটা করেছেন।’’ পরে বিধানসভায় নিজের ঘরে পার্থবাবু বলেন, ‘‘কারা টাকা দিয়ে চাকরি পাচ্ছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে দিলে তো ধরার সুযোগ থাকে। যিনি টাকা দিচ্ছেন এবং যিনি টাকা নিচ্ছেন, দু’জনের বিরুদ্ধেই কঠোরতম ব্যবস্থা নেব।’’
স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতার অভাবের অভিযোগে প্রায়ই বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা। সেই সমস্যা মেটাতে শিক্ষা দফতর উদ্যোগী হয়েছে বলেও পার্থবাবু এ দিন জানান। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি, যাতে এ বার থেকে স্কুলের শূন্য পদের তালিকা অনলাইনে জানানো যায়। সে ক্ষেত্রে স্কুল গুলিকে আর ডিআই-এর মারফৎ আসতে হবে না। আর স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরের পরীক্ষা থেকে সফল পরীক্ষার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে ওয়েবসাইটে। ওয়েটিং লিস্ট বলে কিছু থাকবে না। সেই চেষ্টাও করা হচ্ছে।’’ এই মর্মে শিক্ষাদফতর একটি প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদনের জন্য পাঠাচ্ছে বলে বিকাশ ভবন সূত্রের খবর।
স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের নানা অভাব-অভিযোগ নিয়ে প্রায়শই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষা দফতরকে। সেই সমস্যা মেটাতে এ বার শিক্ষা দফতর কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে পার্থবাবু ঘোষণা করেন। পার্থবাবু জানান, দীর্ঘদিন প্রাথমিক বা উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক থাকাকালীন নতুন ভাবে পরীক্ষা দিয়ে কেউ উঁচু ক্লাসের শিক্ষক হলে, তিনি তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা ও বেতনে বাড়তি সুবিধা অর্থাৎ ‘পে প্রোটেকশন’ পাবেন। একই সঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র এবং শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের সম্প্রসারকদের পার্শ্বশিক্ষকদের সমতুল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলেজের অতিথি শিক্ষকদের মধ্যে যাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়মমাফিক যোগ্যতা রয়েছে, তাঁদের কলেজে সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে স্থায়ী করার ক্ষেত্রে বাড়তি ‘ওয়েটেজ’ দেওয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানান।
বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গা এই বাজেট বিতর্কেই বলেন, ‘‘দু’বছর আগে বন্যার সময় আলিপুরদুয়ার জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদ স্থানীয় কিছু স্কুলে জল ঢুকেছে দাবি করে রাজ্য সরকারের থেকে টাকা নিয়েছিল। জেলার কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুললে সেখানে সংশ্লিষ্ট ওই স্কুলগুলিকে টাকা দেওয়ার কথা বলেছিল জেলা সংসদ। কিন্তু ওই স্কুলগুলিতে আদৌ জল ঢুকেছিল কি না এবং টাকাও পৌঁছেছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হোক।’’ বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।