‘পাবুক’-এ আক্রান্ত থাইল্যান্ড।—ছবি রয়টার্স।
প্রথমে ‘পেতাই’। এ বার ‘পাবুক’। পরের পর ঘূর্ণিঝ়ড়ের বাউন্সার ঠেকিয়ে শীত কি দাপট বজায় রাখতে পারবে? আপাতত এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে আবহবিদদের মধ্যে। দিল্লির মৌসম ভবনের সূত্র জানাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় পাবুক শুক্রবার তাইল্যান্ড উপসাগরে ছিল। ক্রমশ সে এগিয়ে আসছে আন্দামানের দিকে। কাল, রবিবার রাতে সে আন্দামান পেরোতে পারে। তার পরেই শীতের উপরে তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কিন্তু সেই প্রভাব উত্তুরে হাওয়ার পথে কতটা কাঁটা বিছোবে, আপাতত তারই হিসেবনিকেশ চলছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলছেন, ‘‘পাবুকের প্রভাবে তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। তবে সেটাও এক দিনের বেশি স্থায়ী হবে না।’’
কেন?
আবহবিদেরা বলছেন, বৃহস্পতিবারের তুলনায় এ দিন পরিস্থিতির কিছুটা বদল হয়েছে। তাতেই পাবুকের শক্তি নিয়ে ধন্দ দেখা দিয়েছে। এ দিন উত্তুরে হাওয়া কিছুটা জোরালো হয়েছে। বর্তমানে বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সাগরের বায়ুমণ্ডলের যা পরিস্থিতি, তাতে আন্দামান পেরোনোর পরেই পাবুক দ্রুত শক্তি হারাতে শুরু করবে। তার উপরে উপকূলের থেকে অনেকটা দূরেই সে মুখ ঘোরাবে মায়ানমারের দিকে। ফলে সে উত্তুরে হাওয়ার পথে সে-ভাবে পাথর ছড়াতে পারবে না বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। মৌসম ভবনের অন্য একটি সূত্রের মতে, উত্তর-পশ্চিম ভারতে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা বায়ু) সরে যাবে। তার পরে উত্তুরে হাওয়ার জোর আরও কিছুটা বাড়তে পারে।
বৃহস্পতিবারের তুলনায় এ দিনই কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা নেমেছে। এ দিন কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার ছিল ১২.৬ ডিগ্রি। মহানগরের অদূরে ব্যারাকপুরে রাতের তাপমাত্রা নেমেছে নয় ডিগ্রিতে। পানাগড়, শ্রীনিকেতন, বাঁকুড়া, পুরুলিয়াতেও জাঁকিয়ে বসেছে শীত। কনকনে ঠান্ডা এ বার টানা খেল্ দেখাচ্ছে উত্তরবঙ্গে। দার্জিলিঙে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দেড় ডিগ্রি। শিলিগুড়ি, কোচবিহারে রাতের তাপমাত্রা ছয় ডিগ্রির কাছেপিঠে রয়েছে। গণেশবাবু বলছেন, ‘‘আপাতত শীতের দাপট কমবেশি এমনই চলবে।’’