নোটের টুকরো

সারাদিন ব্যাঙ্ক আর এটিএমের সামনে লম্বা লাইন। নোট বাতিলের পর সময় যত গড়াচ্ছে সমস্যা ততই বাড়ছে। সাধারন মানুষের মধ্যে বাড়ছে হতাশা আর ক্ষোভও। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রাজ্যের নানা প্রান্তে নোট বদলের নানা চিত্র।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২৭
Share:

উত্তর কলকাতার একটি ব্যাঙ্কের সামনে। ছবি: সুমন বল্লভ

পাল্টে দিলেই পঞ্চাশ মিলবে

Advertisement

ব্যাঙ্কে লাইন দিয়ে পুরনো নোট বদলে এনে দিলেই প্রতি হাজারে মিলবে পঞ্চাশ টাকা করে। এমন শর্তেই লেগে পড়েছেন কিছু কলেজ পড়ুয়া। রবিবার আসানসোলে কিছু ব্যাঙ্কের সামনে লাইনে দেখা গেল এমনই কয়েক জন পড়ুয়াকে। এক ছাত্রের কথায়, ‘‘শনিবার দু’বার লাইন দিয়েছিলাম। আট হাজার বদলে চারশো টাকা পেয়েছি। ’’ এর ফলে অনেক প্রবীণ মানুষ ভোগান্তি থেকেও রেহাই পাচ্ছেন বলেও দাবি ওই পড়ুয়াদের।

Advertisement

পোস্তায় পতন

মাথায় হাত পড়েছে পোস্তার পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীদের। নোট-বাতিলের পর দু’দিন পর্যন্ত পাঁচশো-হাজারে চলেছে বিকিকিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে আর কেউ নিচ্ছেন না ‘অচল’ নোট। ফলে গত তিন দিনে ৮০ শতাংশ কমেছে কেনাকাটা। পাইকারি বাজারে কেনাকাটায় এই বড় ধাক্কায় ছোট বাজারে জিনিসপত্রেরও আকাল দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

প্রণামীতে টান

নোট বিপর্যয়ের জেরে প্রণামী বাক্সেও অর্থ সঙ্কট। শিলিগুড়ির মায়ের ইচ্ছে কালীবাড়ি, আনন্দময়ী কালীবাড়ি, মা ভবানীর মন্দিরের প্রণামীবাক্সে টান পড়েছে। শক্তিগড় এলাকার গৌড়ীয় মঠের স্বামীজিও জানান, তাঁদের মন্দিরেও প্রণামী দান কমেছে।

মাছে মন্দা

রাত আড়াইটা-তিনটে থেকে পরপর মাছের লরি ঢোকে শহরের বিভিন্ন মাছের আড়তে। কিন্তু গত কয়েক দিন সেই চেনা ছবি আর নেই। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা মাছের লরি প্রায় আসছেই না কবরডাঙার মাছের আড়তে। নোট-বাতিলের পরে কমেছে বিক্রিও। ফলে মজুত করে রাখআ মাছ অনেকেই বাজারের খুচরো ব্যবসায়ীদের বেচে দিচ্ছেন টাকা বাকি রেখেও। লেক মার্কেটের ব্যবসায়ীদের একাংশ আবার জানাচ্ছেন, যে-সব ট্রাকে করে ভিন্ রাজ্য থেকে কলকাতায় পণ্য আসে সেই সব পরিবহণ মাধ্যম জানিয়ে দিয়েছে, সোমবার থেকে কোনও বাতিল হওয়া ৫০০, ১০০০ নোট নেবেন না। ফলে পণ্য আমদানিও বন্ধ হওয়ার মুখে।

অ্যাকাউন্ট নেই, দুর্ভোগ

খুচরো খুঁজতে দোরে দোরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওঁরা। কারও হাতে রয়েছে দশ হাজার। কারও হাতে বিশ হাজার। ব্যাঙ্কে যাওয়ার জো নেই ওঁদের কারও। সেখানে ওঁদের কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। তাই বহু বছরের জমানো পাঁচশো, হাজারের নোট নিয়ে প্রবল বিপাকে পড়েছেন সাবেক ছিটমহল দিনহাটার মশালডাঙার দশ পরিবার! ছিটমহল বিনিময়ের আগের সমীক্ষায় নাম ছিল না ওই পরিবারের সদস্যদের কারও। তাই কোনও দেশেরই নাগরিকত্ব পাননি ওঁরা। প্রশাসনের তরফ থেকে অবশ্য ওই ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়েছে ওঁদের। বাসিন্দাদের কয়েকজন জাভেদ আলি, সুক্কুর আলিরা বলেন, “আমাদের তো ব্যাঙ্ক নেই। কেউই খুচরো দিচ্ছে না। তা হলে এই টাকাগুলো কি নষ্ট হয়ে যাবে?” অমিছা বিবি জানান, কোনও কোনও দিন কচু সেদ্ধ খেয়ে থাকতে হচ্ছে। আবার কোনও দিন নুন দিয়ে ভাত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement