জাল প্রতিষেধক-কাণ্ডে বামেদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
জাল প্রতিষেধক-কাণ্ডে জড়িত সকলের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভে নামল সিপিএমের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠন। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের যোগসাজশ ছাড়া এক জন ভুয়ো আইএএস এমন ভাবে পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় জাল প্রতিষেধকের শিবির এবং নানা কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারতেন না বলে সিপিএমের অভিযোগ। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর দাবি, অবিলম্বে আদালতের তত্ত্বাবধানে উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্ত করাতে হবে।
কলকাতা পুরসভা ও স্বাস্থ্যভবনের সামনে সোমবারই বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিল এসএফআই, ডিওয়াইএফআই এবং গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি। সেই বিক্ষোভ ঘিরে ধুন্ধুমার বাধে, পুরসভার সামনে লাঠি চালায় পুলিশ। দু’জায়গাতেই বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করা হয়। জাল প্রতিষেধক-কাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবির পাশাপাশি প্রতিবাদ দমনে পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করে দু’দিন ধরে রাজ্যের সব থানার সামনে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল সিপিএম। কলকাতা-সহ উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মঙ্গলবার সিপিএমের গণসংগঠন পথে নেমে ওই বিক্ষোভের সঙ্গে সঙ্গে সকলের জন্য বিনামূল্যে টিকার দাবিও তুলেছে। তবে বড় কোনও গোলমালের ঘটনা ঘটেনি। বিক্ষোভ চলবে আজ, বুধবারও।
বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবু এ দিন অভিযোগ করেছেন, শাসক দলের মন্ত্রী-সাংসদ, কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য এবং আমলাদের অনেকের কাছেই ওই ভুয়ো ব্যক্তির অবাধ যাতায়াত ছিল বলে বোঝা যাচ্ছে। বিমানবাবুর দাবি, ‘‘অবিলম্বে আদালতের তত্ত্বাবধানে উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। যে হেতু সরকারি দলের বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা যুক্ত আছেন বলে অভিযোগ এবং প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণও জনসমক্ষে এসেছে, ইতিমধ্যেই আদালতে বেশ কয়েকটি মামলাও দায়ের হয়েছে, তাই এই তদন্ত আদালতের তত্ত্বাবধানেই করতে হবে।’’
এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্যও এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে কর্মরত বিচারপতির নেতৃত্বে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আপনি কেবল পুরসভা ও পুলিশের বিরুদ্ধে হালকা মন্তব্য করে দায় এড়িয়েছেন বলে আমাদের মনে হয়েছে। রাজ্য সরকারের তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তদন্ত করলে সত্য উদঘাটিত হওয়ার পরিবর্তে তা ধামাচাপা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি’।