Vaccines

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সামলাতে বিধি

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সব বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। স্থির হয়েছে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যবস্থাপনায় সর্বসম্মত ভাবে একটি প্রোটোকল বা বিধি তৈরি করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৪৬
Share:

ছবি পিটিআই।

করোনার প্রতিষেধক নিয়ে বাড়ি যাওয়ার পরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিলে গ্রাহকদের সুবিধার জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। প্রতিষেধক নেওয়ার পরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা ঘটলে সেই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থাপনার রূপরেখা কী হবে, তা ঠিক করতে বুধবার স্বাস্থ্য ভবনে একটি বৈঠক হয়। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সব বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। স্থির হয়েছে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যবস্থাপনায় সর্বসম্মত ভাবে একটি প্রোটোকল বা বিধি তৈরি করা হবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে গড়া রাজ্য স্তরের কমিটি বৈঠকে বসবে প্রতি বুধবার। টিকা নেওয়ার পরে যাঁদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে, তাঁদের উপসর্গ এবং চিকিৎসার বিষয়ে সেখানেই পর্যালোচনা করবে কমিটি।

রাজ্যের ৩১টি কেন্দ্রে এ দিন করোনার প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। ৩১০০ জন গ্রাহকের মধ্যে ২৪৩৯ জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তবে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর মেলেনি। কিন্তু এ দিনও কো-উইন অ্যাপে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। ‘‘অ্যাপটি বেশ কিছুটা ঠিকঠাক কাজ করছে। তবে এখনও বার বার বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং ধীরে সংযোগের সমস্যাটি এখনও রয়েছে,’’ বলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।

Advertisement

এ দিনই দ্বিতীয় দফায় কোভিশিল্ডের ৬,৯৯,০০০ ডোজ় কলকাতায় পৌঁছেছে। সেগুলি বাগবাজারের কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল স্টোর্সে রাখা হয়েছে। প্রয়োজন মতো তা পাঠানো হবে বিভিন্ন কেন্দ্রে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রতি সপ্তাহে সোম, মঙ্গল, শুক্র ও শনিবার রাজ্যের প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতিষেধক প্রদানের নির্ধারিত কর্মসূচি চলবে। করোনা ছাড়া অন্য প্রতিষেধকের কর্মসূচি চলবে বুধ ও বৃহস্পতিবার। এখন রাজ্যে ২০০টি কেন্দ্র আছে। পরে সংখ্যাটা বাড়বে। কাল, শুক্রবার থেকেই প্রতিষেধক প্রদান কেন্দ্রের সংখ্যা কিছুটা বাড়ানোর কথা বলেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।

প্রথম দিন কিছুটা জড়তা থাকলেও পরের দু’দিন রাজ্যে টিকা দেওয়ার কাজ ভাল ভাবেই হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। ওই তিন দিনে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে মৃদু হলেও ৪৩টি ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর এসেছিল। টিকা নেওয়ার পরে দু’-তিন জন হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁদের সকলেই সুস্থ আছেন বলেই এ দিন জানায় স্বাস্থ্য দফতর। তবে সেই সব ঘটনা পর্যবেক্ষণের পরে তারা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যবস্থাপনায় আরও জোর দিতে চাইছে। সেই জন্যই এ দিন বৈঠক ডাকা হয়েছিল স্বাস্থ্য দফতরে।

রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে ওই বৈঠকে ছিলেন টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমিটির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং অন্য চিকিৎসকেরা। তিন দিনের অভিজ্ঞতা বলছে, যাঁদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগেরই জ্বর, বমি-ভাবের মতো উপসর্গ আছে। দু’-এক জনের কাঁপুনি ও বমি হয়।

চিকিৎসকদের একাংশের মতে, এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে তিনটি পর্বে ভাগ করা যেতে পারে। ১) প্রথম আধ ঘণ্টার মধ্যে উপসর্গ দেখা দিল এবং তা নিজে থেকেই ঠিক হয়ে গেল। ২) কোনও সমস্যা হতেই প্রতিষেধক গ্রাহককে ওষুধ দেওয়া হল, তার পরে তিনি সুস্থ হয়ে গেলেন কিংবা প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হল। ৩) টিকা নেওয়ার পরে আধ ঘণ্টা সুস্থ থেকে বাড়ি চলে যাওয়ার পরে কোনও সমস্যা দেখা দিল। এখনও পর্যন্ত অবশ্য এই সমস্যা কারও হয়নি।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ব্যবস্থাপনায় রাজ্যের ৪১ জনের বিশেষজ্ঞ-কমিটিতে আরও কয়েক জনকে যুক্ত করা হয়েছে। থাকছেন স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের শিক্ষক চিকিৎসক বিভূতি সাহা, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক জ্যোর্তিময় পাল। কমিটির উপদেষ্টা স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রাক্তন শিক্ষক চিকিৎসক শান্তনু ত্রিপাঠী এবং আহ্বায়ক পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর প্রমিত ঘোষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement