রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ফাইল চিত্র।
ফের রাজভবন-নবান্ন সঙ্ঘাতের আবহ তৈরি হচ্ছে বিধানসভায়। সোমবার বাদল অধিবেশনে যোগ দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাজির হতে পারেন বিধানসভায়। আর সেই দিনই পেশ হতে পারে ‘পশ্চিমবঙ্গ ট্যাক্সেশন ট্রাইবুনাল (সংশোধনী) বিল ২০২২’। অর্থ দফতরের নিয়ন্ত্রণে থাকা ট্যাক্সেশন (কর) ট্রাইবুনালের দুই শীর্ষপদ চেয়ারম্যান ও জুডিসিয়াল মেম্বারের নিয়োগের দায়িত্ব থেকে রাজ্যপালকে সরাতেই এই বিলটি পাশ করা হবে বলে সূত্রের খবর। ফলে আগামী দিনে এই দায়িত্ব পালনের অধিকার হাতে পাবেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও রাজ্য সরকার। যে কারণে বিধানসভায় বিল পাশ করে আইন সংশোধনের কথা ভেবেছে নবান্ন।
সোমবারই বিধানসভায় এই মর্মে সংশোধনী বিল পেশ করতে পারেন অর্থ দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এই বিল পাশ করার ক্ষেত্রে বিতর্কে অংশ নিয়ে রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করবেন তিনিই। সঙ্গে এই বিতর্কে অংশ নিতে দলীয় বিধায়কদের প্রস্তুতি নিয়ে অধিবেশনে যোগ দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের কর সংক্রান্ত বিতর্কের জেরে দাখিল হওয়া অভিযোগ এবং মামলার নিষ্পত্তি করার দায়িত্বে থাকে এই ট্রাইবুনাল। আচমকা বিধানসভায় এই বিল পাশ নিয়ে খানিকটা বিব্রত আইন মহল। কারণ এত দিন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে শলা-পরামর্শ করেই রাজ্যপাল এই ট্রাইবুনালের পদাধিকারীদের নিয়োগ করে এসেছেন। ১২ মে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের সঙ্গে আলোচনা করে এই পদে প্রাক্তন বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীকে নিয়োগের নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে। সম্প্রতি এই বিষয়ে অর্থ দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিয়োগের কথা ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন এই বিলটি আনা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
চলতি অধিবেশনে রাজ্যপালকে সরিয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য পদে বসানোর বিল পাশ করেছে রাজ্য সরকার। যদিও সেই বিলগুলির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করছে রাজ্যপালের স্বাক্ষরের ওপর। একই ভাবে ‘পশ্চিমবঙ্গ ট্যাক্সেশন ট্রাইবুনাল (সংশোধনী) বিল ২০২২’-কেও রাজ্যপালের স্বাক্ষরের উপর নির্ভর করতে হবে। তাই এই বিলটি পাশ হলেও, তা আদৌ কার্যকর করা যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।