প্রতীকী ছবি।
রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার যোগের প্রক্রিয়ায় গতি বাড়াচ্ছে রাজ্য।
অনেকেই রেশন দোকানের সুবিধা নেন না। অথচ তাঁদের রেশন কার্ড রয়ে গিয়েছে। সেই হিসেবে এত দিন তাঁদের বরাদ্দ রেশনও পৌঁছে যেত ডিলারদের ঘরে। অভিযোগ, তা উদ্বৃত্ত হত এবং সেটা ঘুরপথে চলে যেত বাজারে। এ বার সেটাই পুরোপুরি বন্ধ করতে চাইছে রাজ্য সরকার।
প্রশাসনের অন্দরের বক্তব্য, আধার সংযোগ হয়ে গেলে কোন কার্ডে রেশন তোলা হচ্ছে, তা সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব। তাতে ‘অপ্রয়োজনীয়’ কার্ডগুলি একটা সময় নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। পাশাপাশি, বরাদ্দের পুরো তথ্য যে-হেতু অনলাইনে মিলবে, তাতে ‘কারচুপি’ এড়ানো যাবে সহজেই।
এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, “রেশন পেতে আধার যোগের সুবিধা নেওয়া উচিত। অনেকের রেশন কার্ড থাকলেও তাঁরা রেশনসামগ্রী সংগ্রহ করেন না। তাঁদের ক্ষেত্রে শুধু পরিচয়পত্র হিসেবেই রেশন কার্ড রেখে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পরিচয়পত্র হিসেবে সেই কার্ডের গুরুত্ব কমেছে। ফলে হাজারো কাঠখড় পুড়িয়ে তাঁরা নতুন করে রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার যোগ করাতে না-ও চাইতে পারেন।”
রাজ্যে ১০ কোটির কিছু বেশি মানুষের রেশন কার্ড রয়েছে। ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ চালু করতে গিয়ে দ্রুত প্রতিটি রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযোগ করাতে হচ্ছে। নবান্ন সূত্রের খবর, অর্ধেক কার্ডের সঙ্গে আধার যোগ হয়ে গিয়েছে। বাকি কাজ বাড়ি বাড়ি গিয়ে, এলাকায় ও দুয়ারে শিবির করে এবং বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে শেষ করতে চাইছে রাজ্য। রেশন দোকানে রেশনসামগ্রী তুলতে গিয়েও আধার যোগ করানোর সুবিধা মিলছে। খাদ্যকর্তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যে-সব যোগ্য উপভোক্তার আধার কার্ড নেই, প্রযুক্তির চাপে তাঁরা যাতে বাদ না-পড়েন, সেটা নিশ্চিত করা হবে। নতুন আধার কার্ড করিয়ে রেশন কার্ডের সঙ্গে তা যোগ করার সুবিধাও থাকবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সামনে। সেই কারণেই রেশন দোকানগুলিতেও আধার যোগের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের খবর, আধার সংযোগ করাতে প্রতিটি উপভোক্তাকে এসএমএস পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে।
খাদ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, এখন থেকে ‘ই-পস’ যন্ত্রের মাধ্যমে রেশন তোলা যাবে। সেখানে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি কোনও কারণে কাজ না-করলে নিজের মোবাইল ফোনে আসা ওটিপি দেখিয়ে উপভোক্তা সেই কাজ করতে পারবেন। রেশন তোলার পরে গ্রাহক পণ্যের বিবরণ-সহ পুরো তথ্য এসএমএসের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন। এ ভাবে রাজ্যে কত মানুষ রেশন তুলছেন, তার একটা পূর্ণাঙ্গ হিসেব অনলাইনেই জানতে পারবে দফতর। রেশন দোকানগুলিতে যে-সামগ্রী বরাদ্দ হবে, তা যোগ্য হাতে পৌঁছচ্ছে কি না, সেই তথ্যও এক ঝলকে পেয়ে যাবে সরকার। ফলে বরাদ্দের ‘অপব্যবহার’ রোখাও সহজ হবে।