এসএসসির প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
গত বুধবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার জামিন সংক্রান্ত মামলা প্রত্যাহার করে নিলেন কল্যাণময়। বুধবার তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে দিলেও হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, বৃহস্পতিবার আবার তাঁরা মামলাটি শুনবেন।
গত ১৩ ডিসেম্বর কলকাতা হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করেন কল্যাণময়। আদালত এ প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। কিন্তু গত ২২ ডিসেম্বর জামিন মামলার পরবর্তী শুনানিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জবাবে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। বুধবারও সিবিআইকে বিচারপতি বাগচী পরামর্শের সুরে বলেন, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতিতে আর্থিক লেনদেনের তদন্ত ভাল করে করুন। অযোগ্যদের তো আর ভালবেসে চাকরি দেওয়া হয়নি!’’ একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উদ্দেশে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘জোরালো যুক্তি না থাকলে এক জনকে কত দিন বন্দি করে রাখতে পারবেন?’’
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে কল্যাণময় ১১৩ দিন ধরে জেলে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও পেশ হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কল্যাণময়ের আইনজীবী বলেছিলেন, তাঁর মক্কেলের শারীরিক সমস্যা রয়েছে। তা ছাড়া স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন শান্তিপ্রসাদ সিনহা। তাঁর দেওয়া সুপারিশপত্র মেনেই নিয়োগ করা হয়েছে। বুধবার এ ব্যাপারে আদালতের প্রশ্নের জবাবে সিবিআই জানিয়েছে, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও প্রচুর অযোগ্যকে নিয়োগ করা হয়েছে। তদন্তে বেনিয়ম দেখেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, এর আগেও আদালত কল্যাণময়ের মামলায় সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভর্ৎসনা করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। বিচারপতি বাগচী সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, এই মামলায় কল্যাণময়ের ভূমিকা ঠিক কী?
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর টানা জেরার পরে গ্রেফতার করা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি কল্যাণময়কে। ২০১০ সাল থেকে টানা প্রায় ১০ বছর মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি থাকাকালীন শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতিতে কল্যাণময়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে সিবিআই অভিযোগ করে। এর আগে বিশেষ সিবিআই আদালত এবং হাই কোর্টে কল্যাণময়ের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।