ফাইল চিত্র।
স্কুলে নিয়োগ-দুর্নীতিতে এবার নাম জড়াল বনগাঁর এক ব্যক্তির। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ব্যক্তিকে নিয়ে একটি পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে। (আনন্দবাজার অবশ্য সেই পোস্টের সত্যতা যাচাই করেনি)। বলা হয়েছে, তিনি বনগাঁর একটি স্কুলের শিক্ষক। অভিযোগ, তিনি নাকি শিক্ষক নিয়োগ এবং বদলি করে দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পোস্টে অবশ্য স্পষ্ট করে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। ওই ব্যক্তির পরিচয় দেওয়া হয়েছে,‘বনগাঁর চন্দন’ হিসেবে।
শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের একটি ভিডিয়ো ঘিরে শোরগোল পড়ে। ‘রঞ্জন’ নামে এক ব্যক্তি টাকা নিয়ে স্কুলে চাকরি দিতেন বলে অভিযোগ করেন উপেন। পরে জানা যায়, বাগদার বাসিন্দা সেই ব্যক্তির আসল নাম চন্দন মণ্ডল। হাই কোর্ট তার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। সিবিআই অবশ্য চন্দন মণ্ডলকে এখনও ধরতে পারেনি।
সেই ঘটনার সূত্র ধরেই এই ব্যক্তিকে ‘বনগাঁর চন্দন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে বাগদার চন্দন মণ্ডল চাকরি দিতে না পারলে সুদ-সহ টাকা ফেরত দিতেন বলে ভিডিয়োতে জানিয়েছিলেন উপেন। সেই কারণে তাকে ‘সৎ’ বলেও উল্লখ করেন তিনি। ‘বনগাঁর চন্দন’-এর বিরুদ্ধে অবশ্য টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রতারিতদের পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে ওই পোস্টে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, রবিবার সন্ধে পর্যন্ত এই সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ‘বনগাঁর চন্দন’-এর আসল নাম-পরিচয় জানেন অনেকেই। তিনি এলাকার এক তৃণমূল নেতা। সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট ঘিরে তাই চাপানউতোর শুরু হয়েছে স্থানীয় রাজনীতিতে।
বিজেপি নেতা তথা বনগাঁ পুরসভার কাউন্সিলর দেবদাস মণ্ডল বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় যাঁকে নিয়ে লেখা হয়েছে, তিনি আসলে তৃণমূলের একটি শাখা সংগঠনের নেতা। শুনেছি চাকরি ও বদলি করে দেওয়ার নাম করে টাকা লুট করেছে। সিবিআই এবং আদালতের কাছে আবেদন,ওকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।”
বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের শঙ্কর আঢ্য বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট আমারও নজরে এসেছে। প্রতারিতদের কেউ কেউ আমার কাছেও অভিযোগ করেছেন।”
অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল শেঠ বলেন, “অভিযোগ কখনও ফেসবুকে হয় না। দলীয় নেতৃত্ব বা পুলিশের কাছে করতে হয়। যার দিকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে, তিনি আমাদের শাখা সংগঠনের নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই।”
যার দিকে অভিযোগের তির, তৃণমূলের সেই নেতার কথায়, “অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বিরোধীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অপপ্রচার করছে। আমার বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছেও কোনও অভিযোগ নেই।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।