শান্তিপ্রসাদ সিন্হা (বাঁ-দিক থেকে মাঝে) এবং অশোক সাহা। —নিজস্ব চিত্র।
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এসএসসির প্রাক্তন দুই উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা এবং অশোক সাহাকে গ্রেফতার করল সিবিআই। এই সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই যে এফআইআর দায়ের করেছিল তাতে প্রথম নামই ছিল শান্তিপ্রসাদের। অশোকের নাম ছিল চতুর্থ স্থানে। সিবিআই সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি মেলার পরই তাঁদের দু’জনকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বার নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তাঁদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবেন সিবিআই গোয়েন্দারা।
হাই কোর্ট নিযুক্ত বাগ কমিটির রিপোর্টেও এসএসসির প্রাক্তন আহ্বায়ক শান্তিপ্রসাদ এবং এসএসসির প্রাক্তন সচিব অশোকের নাম ছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, এই দু’জন তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। তথ্য গোপন করছিলেন। এই কারণেই শান্তিপ্রসাদ ও অশোককে গ্রেফতার করা হল।
এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট’ (ইডি) গ্রেফতার করেছে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। ইডির তল্লাশিতে টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার হয়। পাওয়া যায় সোনাদানাও। এছাড়াও একাধিক নথি থেকে পার্থ-অর্পিতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বহু সম্পত্তির হদিস পান তদন্তকারীরা।
গ্রেফতারির পর সিবিআইয়ের প্রেস বিবৃতি
এসএসসি নিয়োগ নিয়ে যে সময় দুর্নীতির অভিযোগ, সেই সময় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় একটি উপদেষ্টা কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন। সেই কমিটির প্রধান ছিলেন শান্তিপ্রসাদ। সিবিআই সূত্রে দাবি, এই উপদেষ্টা কমিটির মাধ্যমেই ভুয়ো নিয়োগের সুপারিশ করা হত। এই কারণেই সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইআরে প্রথম নামটিই শান্তিপ্রসাদের। গ্রেফতারির পর যে বিবৃতি জারি করেছে তদন্তকারী সংস্থা, তাতেও এ কথাই বলা হয়েছে। উপদেষ্টা কমিটির মেয়াদ শেষের পর অবৈধ ভাবে গ্রুপ-সি পদে নিয়োগ হয়েছিল বলেও সিবিআই বিবৃতিতে দাবি করেছে।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে এসএসসিতে নিয়োগে অনিয়মের তদন্তভার পায় সিবিআই। কিন্তু এত দিন এই মামলায় কাউকে গ্রেফতার করেনি সিবিআই। বুধবার বিকেলে এসএসসির প্রাক্তন দুই উপদেষ্টাকে গ্রেফতার করল তারা।