Calcutta High Court

‘ভগবান চিনতে না পারলে ঠাকুরঘরে যান’, দুই কোর্টে এসএসসির দুই অবস্থান নিয়ে মন্তব্য বিচারপতির

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের উত্তরপত্র প্রকাশের নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। আইনজীবীরা বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেন, শীর্ষ আদালতে গিয়ে অবস্থান বদল করছে কমিশন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ ১৯:৪৪
Share:

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

হাই কোর্টে এক রকম কথা বলার পর সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে নিজেদের অবস্থান বদলে ফেলছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)! সেই কারণেই দুই আদালতের মধ্যে বার বার নির্দেশের পার্থক্য তৈরি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এমনই অভিযোগ উঠল কমিশনের বিরুদ্ধে। যা শুনে কড়া মন্তব্য করলেন বিচারপতি।

Advertisement

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘যাঁরা ভগবানকে চিনতে পারছেন না, তাঁদের বলব ঠাকুরঘরে গিয়ে দেখুন। ভগবান চিনে যাবেন।’’ হাই কোর্টের বিচারপতি এবং আইনজীবীদের কাউকে ‘বোকা’ মনে করার কারণ নেই বলেও জানান তিনি।

কেন এমন মন্তব্য করলেন বিচারপতি?

Advertisement

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশেই চাকরি হারানো ববিতা সরকারের করা একটি মামলায় তিনি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ৯০৭ জন শিক্ষকের নাম, রোল নম্বর-সহ উত্তরপত্র প্রকাশের যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ডিভিশন বেঞ্চে সেই নির্দেশ বহাল থাকলেও সুপ্রিম কোর্টে তাতে কিছুটা পরিবর্তন করা হয়। নাম, রোল নম্বর প্রকাশ করতে বললেও শীর্ষ আদালত উত্তরপত্র প্রকাশের নির্দেশে এক সপ্তাহের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, উত্তরপত্র বাদে ৯০৭ শিক্ষকের নাম ও রোল নম্বরের তালিকা বুধবারই প্রকাশ করেছে এসএসসি।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলাটি আবার ওঠে। কেন উত্তরপত্র প্রকাশের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হল? প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বিচারপতিকে জানান, কমিশন এই মামলায় হাই কোর্টে যে অবস্থান নিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে তা কিছুটা বদলে ফেলেছে। কারচুপির কথা হাই কোর্টে স্বীকার করলেও শীর্ষ আদালতে সরাসরি স্বীকার করা হচ্ছে না। সেই কারণেই সুপ্রিম কোর্ট উত্তরপত্র প্রকাশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এসএসসির অবস্থানের কারণেই হাই কোর্টের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে পাল্টে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। নিয়োগ সংক্রান্ত অন্য মামলাগুলিতেও একই ছবি দেখা গিয়েছে, জানান আইনজীবীরা।

এই অভিযোগ শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে বসে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটির শুনানির রেকর্ড শোনেন। তা শোনার পর অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। কেন কমিশন দুই আদালতে দু’রকম অবস্থান নিচ্ছে, তা জানতে চান বিচারপতি। হাই কোর্টে সওয়াল চলাকালীন তারা যা বলেছে, তার নেপথ্যে অন্য কোনও চাপ কাজ করেছে কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন।

প্রসঙ্গত, নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক মামলাতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে স্থগিত হয়েছে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার ক্ষেত্রে তো বেঞ্চও বদলে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে একাধিক মামলা সরিয়ে অন্য বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement