Paresh Adhikari

SSC: মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতার বেতনের টাকা দিতে হবে ববিতাকে, নিয়োগ চাই ১০ দিনের মধ্যে: হাই কোর্ট

মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতার বেআইনি নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন ববিতা সরকার। তাঁকে ১০ দিনের মধ্যে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ হাই কোর্টের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২২ ১৫:০৪
Share:

অঙ্কিতা (বাঁ দিকে), ববিতা (ডান দিকে)।

রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা বেআইনি ভাবে স্কুলে চাকরি পেয়েছেন, এই অভিযোগ করে যিনি সোচ্চার হয়েছিলেন, শিলিগুড়ির সেই এসএসসি পরীক্ষার্থী ববিতা সরকারকে ১০ দিনের মধ্যে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। শুধু তা-ই নয়, মন্ত্রীকন্যার চাকরিতে যোগ দেওয়ার দিনকেই ববিতার চাকরি পাওয়ার দিন হিসাবে ধরে নিতে হবে। ফলে ওই দিন থেকে তাঁর প্রাপ্য সুযোগসুবিধা দিতে হবে। শুক্রবার এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

Advertisement

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানতে চান, ‘‘ববিতা সরকারকে কি চাকরি দেওয়া হয়েছে? এখনও কেন তাঁকে নিয়োগ করা হল না?’’ জবাবে এসএসসি-র আইনজীবী জানান, আদালতের নির্দেশ মতো বেআইনি নিয়োগের অভিযোগে অনেককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ববিতাকে এখনও চাকরি দেওয়া যায়নি। এর পর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। তখন তাঁকে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারী ববিতার নম্বর বেশি থাকা সত্ত্বেও ‘লজ্জাজনক ভাবে’ অঙ্কিতাকে ওই তালিকায় এক নম্বরে এনে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। অঙ্কিতাকে চাকরি দেওয়া না হলে ববিতা পেতেন। কারণ, তাঁর নাম ওয়েটিং লিস্টে ২০ নম্বরে ছিল। অঙ্কিতা এক নম্বরে আসায় ববিতার নাম যায় ২১ নম্বরে।

এর পরই এসএসসিকে নির্দেশ দেওয়া হয় যে, ২৭ জুনের মধ্যে ববিতা সরকারকে সুপারিশপত্র দিতে হবে। ২৮ জুনের মধ্যে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে সুপারিশপত্র পাঠাতে হবে। ৩০ জুনের মধ্যে পর্ষদকে নিয়োগপত্র দিতে হবে। হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ, ১০ দিনের সুদ সমেত মন্ত্রীকন্যার টাকা ববিতাকে দিতে হবে। কারণ, তিনি চাকরি পাওয়ার যোগ্য ছিলেন। অঙ্কিতার জন্য তাঁর নাম বাদ পড়েছিল। মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতার আইনজীবীকে ১০০ টাকা জরিমানা করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ১৫ দিনের মধ্যে ওই টাকাও দিতে হবে ববিতাকে।উল্লেখ্য, অঙ্কিতার বিরুদ্ধে তাঁর বাবার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ ভাবে শিক্ষকতার চাকরি নেওয়ার অভিযোগ ছিল। অভিযোগ করেছিলেন ববিতা সরকার নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। কিছু দিন আগে মন্ত্রীকন্যার চাকরি খারিজ করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। এমনকি, চাকরিসূত্রে যে বেতন গ্রহণ করেছেন অঙ্কিতা, তা ফেরত দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। ববিতা সরকারের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন,‘‘ আমরা অত্যন্ত খুশি। যে চাকরি ২০১৮ সালে ববিতার পাওয়ার কথা ছিল, আজ তিনি পাচ্ছেন...।’’

Advertisement

গত চার বছর ধরে নিজের অধিকারের জন্য লড়াই করছেন ববিতা। ২০১৬ সালে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ২০১৭-র মেধাতালিকায় জায়গাও করে নিয়েছিলেন। তারও আগে ২০১০ সাল থেকে শিক্ষকতার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন তিনি। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হতে বসেছিল বেআইনি ভাবে পাওয়া মন্ত্রীকন্যার চাকরিতে। অঙ্কিতার চাকরি খারিজের প্রসঙ্গে ববিতা বলেছিলেন, ‘‘ও তো ইন্টারভিউ দেয়নি। ওর চাকরি হওয়ার কথাই ছিল না। আমি সমস্ত প্রক্রিয়া মেনে পরীক্ষা দিয়ে জায়গা করে নিয়েছিলাম। ওই চাকরি তো আমারই পাওয়া উচিত।’’ বিচারপতির রায়ে খুশি হলেও তার কার্যকারিতা কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল তাঁর মনে। অবশেষে সেই ধন্দ কাটল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement